মুন্সিগঞ্জঃ ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নামে পরিচিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে টোল আদায় শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে টোল আদায় শুরু হয়।
শুক্রবার (১ জুলাই) কেরানীগঞ্জ সড়ক ও জনপদের (সওজ) কমকর্তা আবদুল মোমেন জানান, রাত ১২টা থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু হয়েছে। আদায়কারী সংস্থা কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে (কেইসি) টোল প্লাজা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পদ্মা সেতুর উত্তর প্রান্তে তিনটি কালেকশন বুথ বসার কথা থাকলেও, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এখন পর্যন্ত শুধু ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বুথ বসানো হয়েছে। কেরানীগঞ্জে আব্দুল্লাপুর ও মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের সনবাড়িতে আজ দুপুর ২টার মধ্যে টোল বুথ বসানো হবে।
এদিকে টোল আদায়ের প্রথমদিনই ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। এতে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজা এলাকায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী যানবাহনের ৪ কিলোমিটারের বেশি এবং ভাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী পরিবহনগুলোর প্রায় এক কিলোমিটার যানজট দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সরেজমিনে বগাইল টোল প্লাজা এলাকায় দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজার ১০টি টোল বুথের মধ্যে ৪টি বুথে টোল আদায় করা হচ্ছে। বাকি ৬টির মধ্যে ৩টিকে সক্রিয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সচল ৪টি টোল বুথের দুটির মাধ্যমে ঢাকাগামী যানবাহন থেকে এবং বাকি দুটির মাধ্যমে ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। মাঝে মাঝে টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সঙ্গে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে।
টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার মহাসড়ক ব্যবহার করলে প্রতিটি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা ও মোটরবাইক ১০ টাকা। এ ছাড়া, ট্রাকের ক্ষেত্রে ট্রেইলার ট্রাককে (সবচেয়ে বড় ট্রাক) টোল দিতে হবে ৬৭৫ টাকা, ভারী ট্রাকের ক্ষেত্রে ৪৪০ টাকা এবং মাঝারী আকারের ট্রাকের ক্ষেত্রে ২২০ টাকা।
ঢাকার উত্তরা থেকে মাদারীপুরগামী ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. নূর আলম বলেন, উত্তরা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গার বগাইল পর্যন্ত মাত্র এক ঘণ্টায় এসেছি। অথচ এখানে এসেই বসে আছি এক ঘণ্টার ওপরে। সেতু চালু হওয়ার পর ভাবলাম দ্রুত বাড়িতে যাব। সেই যানজট আর পিছু ছাড়ল না।
তিনি আরও বলেন, গাড়ির চাপ তো থাকবেই। তবে টোল আদায়ের গতি আরও বাড়ালে আমরা দ্রুত পার হতে পারতাম।
ঢাকার বাড্ডা থেকে বরিশালগামী পণ্যবাহী বড় ট্রাকের চালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, ১০টা টোল বুথের মাত্র চারটা চালু হয়েছে। বাকি ছয়টা বুথ বন্ধ। এ জন্য টোল আদায়ে জ্যাম লেগে গেছে। এই জ্যাম আস্তে আস্তে বাড়বে। কারণ, যতই বেলা বাড়ছে, ততই গাড়ির চাপ বাড়ছে।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে ফরিদপুরগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ১০৫ মিনিটে সায়েদাবাদ থেকে এই বগাইল টোল প্লাজায় এসেছি। এখানে এসে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে আছি। এখনো সামনে দুই-তিন শত যানবাহনের সারি। পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের টোল একসঙ্গে নিলে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
টোল প্লাজার ডেপুটি ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে ১০টি বুথের মধ্যে চারটি সচল রয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেশি। অল্পসংখ্যক টোল বুথ দিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বাকি ছয়টি চালু করার। ওগুলো চালু করা সম্ভব হলে এই যানজট কমে যাবে।
এমবুইউ