ঢাকাঃ সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষার্থীর স্ট্যাম্পের আঘাতে আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার (৩৫) মারা গেছেন। সোমবার (২৭ জুন) ভোর সোয়া ৫টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সকাল ৮টার দিকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ইনচার্জ ইউসুফ আলী।
নিহত শিক্ষক উৎপল সরকার সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। গত শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে ওই স্কুল মাঠে শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে সে।
জানা গেছে, শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে ওই স্কুলমাঠে শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে ওই শিক্ষার্থী। পরে আহত অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে মৃত্যু হয় শিক্ষক উৎপল কুমারের।
নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি মেয়েদের ইভটিজিংসহ নানা উচ্ছৃঙ্খলার কারণে শাসন করায় ওই ছাত্র আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এর উপযুক্ত বিচার চাই।
হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, ‘গত শনিবার স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। শিক্ষক উৎপল কুমার মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ করে ওই ছাত্র মাঠ থেকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। উৎপলকে দ্রুত উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে এনাম মেডিক্যালে আইসিউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উৎপল কুমার স্কুলের শৃঙ্খলা ও পরিবেশ কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। ছাত্রদের সময় চুল কাটতে বলাসহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন। শিক্ষার্থীদের অপরাধের বিচারও করতেন তিনি। সে কারণেই হয়তো ক্ষোভ থেকে ওই ছাত্র তার ওপর হামলা চালায়।’
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক বলেন, নিহত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থাকায় নিয়ম কানুন মানাতে শিক্ষার্থীদের শাসন করতেন। তিনি ওই শিক্ষার্থীকেও শাসন করায় এ ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। অভিযুক্তসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
এমবুইউ