কলাপাড়াঃ কুয়াকাটা সৈকতে আনন্দে ভ্রমনে প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরতে আসেন পর্যটকরা। সৈকতে এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পর্যটকরা অনেকটা বিমোহিত হলেও ফটোগ্রাফারদের দৌরত্ম্যে চরম অতিষ্ঠ হয়ে পরেন আগত পর্যটকরা। সৈকতের তীরে পাতা বেঞ্চের ভাড়া রাখা হয় দ্বিগুন থেকে চারগুন।
স্থানীয় সূত্র ও শক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনই সকাল থেকে কুয়াকাটা চৌরাস্তায় একদল ফটোগ্রাফার, ট্যুরিষ্ট পুলিশ বক্সের সামনে, আরেকদল ফটোগ্রাফার সৈকতের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দাড়ানো থাকে। একজন পর্যটক কুয়াকাটা চৌরাস্তায় নামার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চার পাশ দিয়ে ঘিরে ফেলেন ফটোগ্রাফাররা। সেখানে তারা ছবি তুলবেনা বলে পর্যটকরা চলে আসলে দ্বিতীয় দফায় ট্যুরিষ্ট পুলিশ বক্সের সামনে ফের তাদের ধরা হয়। তৃতীয় দফায় সৈকতে গোসলে নামার সঙ্গে সঙ্গে ৩/৪ জন ফটোগ্রাফার পর্যটকের পিছনে পিছনে ছুঁটে চলেন। এতে অনেকটা বিরক্ত হয়ে পরেন পর্যটকরা। এছাড়া সৈকতে পাতা বেঞ্চে বসলেই ঘন্টা প্রতি দিতে হয় দ্বিগুন থেকে চারগুন টাকা। প্রশাসনের সঠিক পর্যবেক্ষন না থাকায় এ কান্ড ঘটছে দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। তাই সৈকতের তীরে বেঞ্চ ব্যবসায়ী এবং ফটোগ্রাফারদের নিয়ন্ত্রনের আনার দাবি আগত পর্যটকদের।
সৈকতের তীরে বেঞ্চ ব্যবসায়ী বেল্লাল হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, ৪০ টাকা করেই ঘণ্টা ভাড়া দেই। এই ভাড়া কে ঠিক করে দিয়েছে সেটা জানতে চাইলে তিনি এর সঠিক উত্তর দিতে পাারেননি।
যশোর থেকে কুয়াকাটা সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটক সাম্মী আথতার বলেন, দফায় দফায় আমাদের ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফাররা ধরে। এতে অনকেটা বিরক্ত হয়ে হোটেলে ফিরে এসেছি। তাই আজ আর সমুদ্রে যাইনি।
রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক স্বামী-স্ত্রী সীমা-বিপ্লব জানায়, ফটোগ্রাফরদের কর্মকান্ড এখন অনেকটা হেনস্তার মতো দাড়িয়েছে। সৈকতের বেঞ্চ ভাড়া আমাদের কাছ থেকে রাখা হয় ঘন্টায় ৪০ টাকা, এটা দ্বিগুন রাখা হয়েছে। অন্যসব পর্যটন কেন্দ্রে এরকম জোড়-জবরদস্তি নেই।
কুয়াকাটা ফটোগ্রাফার মালিক সমিতির সভাপতি আলআমিন এ প্রতিবেদককে জানান, আমাদের ২০০ সদস্য রয়েছে। নিয়ম হচ্ছে চৌরাস্তায় নয় সৈকতের আশে পাশে ফটোগ্রাফাররা দাড়িয়ে থাকবে, পর্যটকরা পছন্দমতো ফটোগ্রাফারদের নিয়ে ছবি তুলবেন। এর বাইরে পর্যটকদের কেউ বিরক্ত করলে তার বিরুদ্ধে সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেক সাংবাদিকদের বলেন, ফটোগ্রাফারদের জন্য বেশকিছু নিয়ম করে দেয়া হয়েছে, এর বাইরে ফটোগ্রাফাররা অনুচিত কিছু করলে কিম্বা পর্যটকদের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে যেভাবে বেঞ্চ ভাড়া দেয় এখানেও সেই অনুযায়ী বেঞ্চ ভাড়া ঠিক করে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
রাসেল কবির মুরাদ/এমবুইউ