Dr. Neem on Daraz
Victory Day

উদ্বোধনের অপেক্ষায় বেতাগী-কচুয়া ফেরি এলাকায় আনন্দ উচ্ছাস


আগামী নিউজ | উপজেলা প্রতিনিধি, বেতাগী (বরগুনা) প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২২, ০১:১৮ পিএম
উদ্বোধনের অপেক্ষায় বেতাগী-কচুয়া ফেরি  এলাকায় আনন্দ উচ্ছাস

বেতাগী-কচুয়া ফেরিতে উৎসুক মানুষের ভীড়

বরগুনাঃ দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনা জেলার বেতাগী ও ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলা সংলগ্ন বিষখালী নদীর বেতাগী-কচুয়া স্থানে ফেরি চালুর এখন অধির আগ্রহে অপেক্ষার প্রহর গুনছে হাজার হাজার মানুষ। ফেরিটি চালু হলে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময়ের মানুষের দাবির বাস্তবায়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার এক নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হবে।

ফেরিটি শনিবার কচুয়ায় এসে পৌঁছানোর পর বেতাগী ও কাঠালিয়া দুই উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে উচ্ছাস ও আনন্দের বন্যা বইছে। ফেরিটি দেখতে উৎসুক মানুষের ভীড় পড়েছে।

রোববার (২৯ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিনই এর সংখ্যা বাড়ছে। এ সময় কথা হয় কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদারের সাথে। তিনি তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, বিষখালী নদীর পূর্বপার বরগুনার বেতাগী উপজেলা এবং পশ্চিমপাড় ঝালকাঠীর কাঁঠালিয়া উপজেলার মানুষের প্রাণের দাবি ছিল। বিষখালী নদীর বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরি চালু হলে এ জনপদের মানুষের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসার ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক দুর এগিয়ে যাবে। এটি চালু হতে শুধূ আনুষ্ঠানিকতার আর সময়ের ব্যাপার মাত্র আর এটি চালু হলে দেশের বেনাপোল থেকে খুলনা, ভান্ডারিয়া, কাঠালিয়া এবং বাউফল, দুমকী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিবিদ্যালয়, লেবুখালী ক্যান্টনমেন্ট, পটুয়াখালী কোষ্টকার্ড , পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মির্জাগঞ্জ, বেতাগী, বরগুনা সদরসহ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনসহ আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে বলে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে কবে নাগাদ চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।

বরগুনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন জানান, বেতাগী অংশের চলমান কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। এখন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে।

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর থেকে তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এর আগে গত ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ সচিবালয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় বেতাগী-কচুয়া অংশে বিষখালী নদীর উপর নতুন ফেরি স্থাপনের প্রশাসনিক অনুমোদনের বিষয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরি স্থাপনে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে সংশ্লিষ্টদের নিকট ফেরি স্থাপনে বেতাগী ও কাঠালিয়া এলাকার রাজণৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, সংবাদ কর্মী ও সাধারণ জনগণ লেখা-লেখি, মিছিল, সভা, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে 
বেতাগী-কচুয়া ফেরি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগরে নন-গেজেটেড সংস্থাপন এনটিআর অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মাদ রফিকুল করিম সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর মতামতসহ প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠান। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট ওই চিঠির ইতিবাচক জবাব দিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দেন। পরে ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ বিষখালী নদীর ওপর বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরি চালুর সম্ভব্যতা যাচাই প্রতিবেদন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান স্বাক্ষরিত চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেইসঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য ঢাকার সড়ক ভবনের ফেরি প্লানিং সার্কেলসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়।

বেতাগীর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির জানান, এটি আমাদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল। ফেরিটি চালু হতে শুধূ আনুষ্ঠানকিতার আর সময়ের ব্যাপার মাত্র আর এটি চালু হলে এ জনপদের হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। ফেরিটি পৌঁছায় আমি সংশ্লিস্টদের ধণ্যবাদ জানাই।

শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। ফেরিটি চালুর অপেক্ষায় এখন আমরা। ফেরিটি চালুর ফলে এ এলাকার যোগাযোগ, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।

সাইদুল ইসলাম মন্টু/এমবুইউ 
 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে