বরগুনাঃ বরগুনা থেকে ঢাকা নৌপথের লঞ্চগুলোর গতি ও মান বেড়েছে। এ পথে ছয়টি লঞ্চের রুট পারমিট (সার্ভিস) রয়েছে, যার মধ্যে চারটি লঞ্চের নিয়ন্ত্রক এমকে শিপিং লাইনস নামের একটি কোম্পানি।
নৌপথটিতে যাত্রীদের একটি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে এমকে শিপিং লাইনসের মালিক মাসুম খান অবশ্য প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘চারটি নয়, এ রুটে একটি লঞ্চের মালিকানা আমার। বাকি তিনটি লঞ্চ আমরা মিলেমিশে চালাই।’
তবে এমকে শিপিং লাইনসের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, বরগুনা-ঢাকা নৌপথে ছয়টি লঞ্চ চলাচলের অনুমতি আছে। এর মধ্যে রাজারহাট-বি, পূবালী-১, শাহরুখ-২, রাজহংস-৮‘র এই চারটি এমকে শিপিং লাইনসের নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্যে রাজারহাট-বি, পূবালী-১ তাঁদের নিজস্ব। রাজহংস-৮–এর মালিক বিআইডবিøউটিএর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি এমকে শিপিংয়ের কাছে ছয় লাখ টাকায় মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছেন লঞ্চটি। আর শাহরুখ-২ মাসিক ১০ লাখ টাকা ভাড়ায় চালাচ্ছে ওই কোম্পানি।
শাহরুখ-২–এর মালিক গতকাল বুধবার দুপুরে বলেন, লঞ্চটি তাঁরা এমকে শিপিংয়ের মাসুম খানের কাছে মাসিক ১০ লাখ টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। এ নৌপথের বাকি দুটি লঞ্চের মধ্যে এমভি ফারহান-৮–এর মালিক সাংসদ গোলাম কিবরিয়া এবং অগ্নিদুর্ঘটনাকবলিত এমভি অভিযান-১০–এর মালিক হামজামাল শেখসহ চারজন।
এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলার কথা থাকলেও প্রায়ই একটি লঞ্চ চলে। গাদাগাদি-ঠাসাঠাসি করে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। কেবিন চেয়েও পান না। ছয় বছর ধরে একচেটিয়া ব্যবসা করছে মাসুম খানের কোম্পানি।
এ সম্পর্কে বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকেই অনিয়ম করে তাঁরা বিশেষ সুবিধা নিয়ে নৌপথটি এমন করে ফেলেছেন। এক মালিকের পাঁচটি লঞ্চ থাকুক, তাতে অসুবিধা নেই। সে ক্ষেত্রে অন্য মালিক যাঁরা আছেন, তাঁদেরও সুযোগ দেওয়া উচিত। একাধিক লঞ্চ না থাকায় যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয় এমকে শিপিং লাইনসের মালিক মাসুম খান বলেন, ‘মূলত এ রুট আমরা জনপ্রিয় করেছি। আমার সেবা ও লঞ্চের মান ভালো, তাই যাত্রীও বেশি। আগে লঞ্চ থেকে যারা চাঁদা তুলতেন, এখন স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের কারণে তা পারে না। তাই ওই বিশেষ ব্যক্তিরা নতুন লঞ্চ এনে আয়ের পথ করতে চেষ্টা চালিয়েছে। তবে ব্যর্থ হয়ে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলছে।
সাইদুল ইসলাম মন্টু/এমএম