কুড়িগ্রামঃ জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নে জরাজীর্ণ ঝুপড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এক অসহায় দম্পতি। ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে যায় বিছানাপত্র, অনেক সময় অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় তাদের।
উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়লই সংলগ্ন নাওডাঙ্গা এলাকার ৭৮ বছর বয়সী অসহায় বৃদ্ধ নূর মোহাম্মদ তার বৃদ্ধা অসুস্থ স্ত্রী জরিনা বেগমকে নিয়ে রাস্তার ধারে বাঁশের চাটাই ও পলিথিন দিয়ে ৪ শতাংশ জমির উপর নির্মিত জরাজীর্ণ ঝুপড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা মেলেনি একটি সরকারি ঘর। বর্তমানে বসবাসের একমাত্র আশ্রয় ঝুপড়িটি জরাজীর্ণ হওয়ায় একটু ঝড়-বৃষ্টিতেই ভিজে যায় বিছানাপত্র, অনেক সময় বৃষ্টি আসলে কাতা বালিশ মুড়িয়ে ঘরের এক কোণায় বৃষ্টি থামা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, কখনো কখনো বেশি বৃষ্টি হলে নিতে হয় অন্যের বাড়িতে আশ্রয়, ফলে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছেন ওই দম্পতি। ছেলে মেয়ে না থাকায় শারীরিক অসুস্থ থাকলেও বৃদ্ধ বয়সেও ছুঁটতে হয় খাবার জোগাড় এর খোঁজে। স্ত্রী জরিনার চোখের সমস্যা থাকলেও টাকার অভাবে করতে পারছেন না চিকিৎসা। তাইতো সমাজের বিত্তবান ও সরকারের কাছে একটি ঘরের আবেদন জানিয়েছেন ওই অসহায় দম্পতি।
অসহায় দম্পতি নূর মোহাম্মদ জানান, ছেলে মেয়ে আমাদের কেউ নেই, এই বৃদ্ধ বয়সে তেমন কাজ কামান করতে পারিনা, বাশেঁর তৈরী কিছু জিনিষ বাড়ীতে তৈরী করে হাটে বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে অতিকষ্টে দিন পার করছি। থাকার একমাত্র ঘরটি জরাজীণ হওয়ায় আমাদের খুব কষ্ট হয়।
স্ত্রী জরিনা বেগম জানান, চোঁখে তেমন একটা দেখতে পাইনা তার পরও অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে কোন ভাবে দিন পার করছি। অনেক অন্যের কাছ থেকে খুজে নিয়ে খেতে।
এলাকাবাসী সলিমুদ্দিন, রহমত আলী ও আমেনা বেগম জানান, এই পরিবারটির দুজনেই অসুস্থ তেমন একটা কাজ করতে পারেনা অনেক সময় অন্যের বাড়িতে গিয়ে খুঁজে নিয়ে খায়ড়, থাকার ভালো একটি ঘরও নেই কোন মহৎ ব্যক্তি বা সরকার যদি এই পরিবারটিকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে কমপক্ষে তারা রাতের বেলা শান্তি মতো একটু ঘুমাতে পারতো।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু, জানান,বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নের মডেল কিন্তু আমার বড়ভিটা ইউনিয়ন বাসী আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে যেমন বঞ্চিত, তেমনি এই পরিবারটি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই মারাত্মক অর্থকষ্টের কারণে তাদের বসতঘরটি পলিথিনের চালা দিয়ে তারা বসবাস করছেন। সরকারি যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন তাদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি যাতে করে ত্রাণ শাখার পক্ষ থেকে এই পরিবারটিকে সহযোগিতা করে তার বসত ভিটাটি মেরামত অথবা একটি নতুন করার ব্যবস্থা করে।
জাহাঙ্গীর আলম/এমএম