Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বিজয়নগরের বিখ্যাত লালি


আগামী নিউজ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২, ১২:৩৬ পিএম
বিজয়নগরের বিখ্যাত লালি

ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ জেলার বিজয়নগর, কসবা ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আখের রস থেকে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু ঘন তরল গুড়। যা স্থানীয়ভাবে বলা হয় লালি। এই লালি দিয়ে ঘরে ঘরে তৈরি হয় শীতকালের নানা রকম পিঠা।

বিজয়নগর উপজেলায় চলতি মৌসুমে আখের রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে দেশীয় খাবার লালি। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আর এসব জমিতে দুই হাজার ৭শ মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হবে। শীত মৌসুমে আখের রসে তৈরি লালি, খেতে খুবই মজা ও সুস্বাদু। এই লালি দিয়ে ঘরে ঘরে তৈরি পিঠা-পুলি শীতের খাদ্য তালিকাকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যায়।

এই তরল গুড় দারুণ মুখরোচক, মূলত পিঠা-পুলি ও পায়েস তৈরিতেই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া চিড়া-মুড়ির সাথে খেতেও অনন্য এই লালি।

লালি তৈরি ও বাজারজাতকরণের সাথে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আখের মৌসুম হওয়ায় এবং শীতকালে বিভিন্ন পিঠায় লালির চাহিদা বাড়ায় জেলার বিজয়নগর, কসবা ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আখ থেকে গুড় তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে শতাধিক কৃষক পরিবার। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে লালি তৈরির কাজ।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, কৃষকরা বাড়ির আঙিনায় মহিষ দিয়ে আখ মাড়াইয়ের কাজ করছেন। দিনভর আখ মাড়াইয়ের মাধ্যমে রস সংগ্রহের পর রাতে সেই রস চুলায় জ্বাল দেয়া হয়। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় জ্বাল দেয়ার পর তৈরি হয় সুস্বাদু লালি। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে লালি তৈরির কাজ। প্রতি কেজি লালি পাইকারদের কাছে বিক্রি হয় ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। আর খুচরা বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।

বিজয়নগর লালি তৈরির কারিগর ছিদ্দিক মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে ১৫ হাজার টাকায় ৩৩ শতাংশ জমির আখ কিনেছেন। এই আখ দিয়ে যে পরিমাণ লালি হবে, তা বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে তাঁর।

সাধন মিয়া নামে আরেক কারিগর বলেন, “আগে বাজারে নিয়ে লালি বিক্রি করতে হতো। এখন পাইকাররা বাড়িতে এসে লালি কিনে নিয়ে যান। এ বছর লালি বিক্রি করে আমার এক লাখ টাকার মতো লাভ হবে। প্রতিবছর শীতের সময়টাতে লালির ব্যবসা করে ভালো টাকা আয় হয়। এতে করে পরিবারের অভাব-অনটন দূর হয়।

জেলায় এবার ৬৮ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ করা হয়েছে। তৈরি এসব লালি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য স্থানেও বাজারজাত করা হচ্ছে। এদিকে গুড়ে ক্ষতিকর কোনো উপাদান যাতে কেউ মেশাতে না পারে সেজন্য নিয়মিত তদারকি করছেন জেলার কৃষি কর্মকর্তা।

জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, “আমরা আশা করছি এবারের মৌসুমে অন্তত ৪ কোটি টাকার লালি বিক্রি হবে। চলতি মৌসুমে জেলার বিজয়নগর, কসবা ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৬৮ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আর এসব জমিতে ৪ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হবে।

আগামীনিউজ/এমবুইউ 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে