লক্ষ্মীপুরঃ জেলার রায়পুরে অ-স্বাভাবিকভাবে বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা। গত ৭ দিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৫৫ শতাংশ জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার ৩ জন ও রোববার একজন করোনায় আক্রান্ত হয়। প্রতিদিন দুপুর ১২ টার পর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউয়ে সারা দেশে যখন সর্বাত্মক এসব উপসর্গ দেখা দেওয়া ও রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জ্বরে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই করোনা পরীক্ষা ও হাসপাতালে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে। যারা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে, তারাও আবার করোনা পরীক্ষা করতে খুব একটা আগ্রহী নয়।
অপরদিকে- ৫ কলেজের শিক্ষার্থীরা টিকা গ্রহন করন করলেও ১৭০ টি প্রাথমিক ও ৭৫টি মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সরকারি হাসপাতাল এসে টিকা গ্রহন করছে। জানা যায়, পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে এমন ঘর কমই আছে যে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত রোগী নেই। অধিকাংশ রোগীই গ্রামের ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে তা সেবন করছেন। করোনা শনাক্ত হলে সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে করোনা পরীক্ষা কিংবা হাসপাতালে যাচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের অধিকাংশ জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে কারো কারো শ্বাসকষ্ট রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে মাত্র ৮জন রোগী ভর্তি আছে, বাকিরা বাড়িতে ও বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া গত এক সপ্তাহে ৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শুধু শনিবার ৩জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন ওই তিনজনেরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মাজেদ হোসেন নামে একজন জানান, গত তিনদিন থেকে তার দুই শিশু বাচ্চা ও বড় ভাই জ্বর আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমার বাড়িতে কমপক্ষে আটজন জ্বর সর্দি আক্রান্ত রোগী রয়েছে। ভয়ে কেউ হাসপাতালে যাচ্ছে না বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. বাহার উদ্দিন বলেন, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কিন্তু সে হারে পরীক্ষা হচ্ছে না। গত এক সপ্তাহে মাত্র ৩৫ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেছি আমরা। করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি রোগী। নানানভাবে রোগীদেরকে করোনা পরীক্ষা করতে উৎসাহিত করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা রোগীদের করোনা পরীক্ষা করার কথা বললেও তাদের অধিকাংশই নানা অজুহাতে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
আগামীনিউজ/শরিফ