ঝালকাঠিঃ সুগন্ধা মাঝনদীতে যাত্রীবোঝাই লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বজনদের সন্ধানে নদীপাড়ের ভিড় করেছেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে নদীপাড়ের বাতাস।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নদী তীরের গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা ভিড় করেন। কেউ স্বজনের খোঁজে অপেক্ষা করছেন। কেউ আবার মৃত পরিবারের সদস্যের জন্য আহাজারি করছেন। পুরো নদীপাড় জুড়ে শোকের মাতম চলছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত রাত ৩টার দিকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন লাগে। মুহূর্তে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৩০ জন নিহত ও আরও অন্তত কয়েক যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। হতাহতদের কারো নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করছে পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা ও ঝালকাঠির কোস্টগার্ড সদস্যরা।
এদিকে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ ৮০-৯০ জন বরিশাল, ঝালকাঠিসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে বরিশালের বার্ন ইউনিট বন্ধ থাকায় সেখানে দগ্ধ রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লঞ্চের যাত্রী সাইদুর রহমান জানান, তিনি ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিলেন। ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে গাবখান সেতুর কিছু আগে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে।
রাত তিনটা থেকে আগুন জ্বলতে থাকে। যাত্রীরা অনেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। অনেকে হয়তো পারেননি। সাইদুর রহমান নামের এই যাত্রী বলেন, লঞ্চে শিশু, বুড়ো, নারীসহ কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিল।
নদী পাড়ে অপেক্ষায় থাকা আমেনা খাতুন জানান, ‘তার ভাই ঢাকা থেকে এ লঞ্চে করে রওনা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।’
এ বিষয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
আগামীনিউজ/বুরহান