ঠাকুরগাঁওঃ রেললাইন দিয়ে কয়েকজন বন্ধুসহ হাঁটছিল কিশোর মাসুদ রানা (১৫)। বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ রেললাইনের ভাঙা অংশ তার চোখে পড়ে। বাড়ির পাশে রেললাইন হওয়ায় সে জানে একটু পরই চলে আসবে ট্রেন। রেললাইন ভাঙা দেখেই সে দৌড়ে গিয়ে খবর দেয় গেটম্যানকে। রেললাইনের গেটম্যান এসে মাসুদের সঙ্গে লাল পতাকা উড়িয়ে থামান কাঞ্চন ট্রেন।
সোমবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যার আগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের ঘুন্টি এলাকার পাশে এ ঘটনা ঘটে। কিশোর মাসুদ রানার বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা কাঞ্চন ট্রেন ও যাত্রীরা। মাসুদ রানা সদর উপজেলার চিলারং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
মাসুদ রানা প্রতিবেদককে জানান, বিকেলে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলাম। দেখি রেললাইন ভাঙা, সেটি দেখামাত্র সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে গিয়ে বিষয়টি গেটম্যানকে জানাই। পরে গেটম্যান ও আমি লাল পতাকা উড়িয়ে ট্রেন আটকাই। এই রকম একটি কাজ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
গেটম্যান আজিজুল ইসলাম বলেন, মাসুদ রানা নামে ছেলেটি খবর দেওয়ার পর আমরা কাঞ্চন ট্রেনকে আটকাই। পরে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কল দিয়ে বিষয়টি অবহিত করি।
তিনি আরও বলেন, মাসুদ বিষয়টি না জানালে হয়তো বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। সে যে কাজটি করছে সেটা প্রশংসনীয়। তার এই মহৎ কাজের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়ে ট্রেন ও যাত্রীরা নিরাপদে যেতে পেরেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, আমরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে দেখি ট্রেন আটকে আছে, সামনে কিছু লোক। দেখা মাত্রই আমরা সেখানে গিয়ে দেখি রেললাইনের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। মাসুদ আমাদের এলাকার সন্তান। সে যে কাজটি করেছে সেটি প্রশংসনীয়।
ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ওয়ে) আব্দুল মতিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জানান, মাসুদ আমাদের গেটম্যানকে এসে বিষয়টি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের লোকজন সেখানে যান। আটকে থাকা কাঞ্চন ট্রেনকে ভাঙা রেল ও স্লিপারের সাহায্য পার করা হয়। কাঞ্চন ট্রেন চলে যাওয়ার পর একতা এক্সপ্রেস ট্রেন আসার আগেই লাইন ঠিক করার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আগামীনিউজ/বুরহান