ঝালকাঠিঃ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় পালিত হয়েছে ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যার ১৬তম বার্ষিকী। জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে দুই বিচারক নিহত হন।
এদিকে বিচারক হত্যা দিবস উপলক্ষে রবিবার নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকরা। সকালে আদালত চত্বর থেকে একটি শোকযাত্রা বের হয়ে শহর ঘুরে ঘটনাস্থল নিহত বিচারকদের স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে নিহতদের স্মরণে জেলা ও দায়রা জজ, জেলা প্রশাসন ও জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে পুস্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। নিহত বিচারকের স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পার্ঘ তুলে দেন আইন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব ডক্টর এ কে এম এমদাদুল হক, জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল্লাহ, জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ পারভেজ শাহরিয়ার ও অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু। এ সময় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়। পরে আদালতের শহীদ সোহেল-জগন্নাথ মিলনায়তনে স্মরণসভা, দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর সকাল ৯ টার দিকে সরকারি বাসা থেকে কর্মস্থলে যাবার পথে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসে এই নৃশংস হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ এবং বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃতু হয় বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ের। এ সময় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি বিধ্বস্ত হয়। আহত অবস্থায় ধরা পড়ে হামলাকারী জেএমবি সুইসাইড স্কোয়ার্ডের সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন। সারাদেশের মানুষ এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যান। এরপর জেএমবির শীর্ষ নেতারা আটক হয়। জঙ্গিদের ঝালকাঠিতে এনে তাদের উপস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকার্য চলে। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহমেদ ২০০৬ সালের ২৯ মে সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেন। উচ্চ আদালতে সে রায় বহাল রাখার পর দেশের বিভিন্ন জেলখানায় ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ৬ শীর্ষ জঙ্গির মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।
এরা হলেন- জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই, সামরিক শাখা প্রধান আতাউর রহমান সানি, উত্তরাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল, দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী খালেদ সাইফুল্লাহ ও বোমা হামলাকারী ইফতেখার হাসান আল মামুন। ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর জঙ্গি আসাদুল ইসলাম আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হয় খুলনা কারাগারে।
আগামীনিউজ/নাসির