রাজশাহীঃ নগরীতে বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাতে পিয়ারুল ইসলাম পিরু (৩৫) নামে এক যুবককে খুন ও আব্দুল কাদের (৫৫) নামে এক অটোরিকশা চালককে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ নভেম্বর) রাতে নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। রবিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো নগরীর রানীনগর এলাকার হাসিবুল ইসলামের ছেলে মো. শিমুল (২১), সাধুর মোড় এলাকার মো. তারিকের ছেলে সোহানুর রহমান সোহান (২২), জেলার চারঘাট উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে মো. আল-আমিন (২১), বাঘা উপজেলার মালি আনদাহো গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে মো. জনি (২১) ও নাটোরের লালপুর থানার মহরকয়া গ্রামের দিরাজ মন্ডলের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩৫)। আর খুন হওয়া পিরু নগরীর রানীনগর এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে এবং অটোরিকশা চালক আব্দুল কাদেরের বাসা শ্রীরামপুর এলাকায়।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় এলাকার কয়েকজন যুবকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় পিরুর। এরপর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু রাত ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক ধারালো চাকু, লোহার রড, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি নিয়ে পিরুর বাড়িতে ঢুকে তাকে এলোপাথাড়ীভাবে মারধর এবং বুক, পেট ও হাঁটুতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান পিরু। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শিমুল ও সোহানকে।
এদিকে শনিবার দিনগর রাত ১টার সময় নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় নেসকো অফিসের পূর্বদিকে ড্রেনে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার পকেটে থাকা মোবাইল নম্বরের সূত্র থেকে ওই ব্যক্তি আব্দুল কাদের এবং তিনি অটোরিকশাচালক বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তৎক্ষনাৎ আরএমপি‘র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় আরএমপি অপারেশন কন্ট্রোল এণ্ড মনিটরিং সেন্টারের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা এবং তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে এটি হত্যাকাণ্ড ছিল বলে পরিষ্কার হয়। একইসঙ্গে শনাক্ত করা হয় আসামীদের। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় চাকুসহ গ্রেপ্তার করা হয় মূল অভিযুক্ত আল-আমিনকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য এবং বাকি আসামীদেরও পরিচয় মেলে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে জনি ও আরিফুল নামে অপর দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কোনো অপরাধী ক্রাইম করে পার পাবে না। অপরাধীরা অপরাধের ধরণ পাল্টালেও পুলিশের আছে প্রযুক্তি, রয়েছে চৌকস কর্মকর্তাও। দুই খুনের ঘটনায় অতি দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ জনকে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাকিদের গ্রেপ্তারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আগামীনিউজ/শরিফ