পটুয়াখালী: কলাপাড়ায় সুদ কারবারীদের দৌরাত্মে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্র করে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সুদী কারবারীরা ব্যাপক হারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব সুদী কারবারীদের কাছ থেকে ক্ষুদ্র কিংবা মাঝারি ব্যবসায়ীরা চড়া সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে পড়েছে লোকসানের মুখে। নিঃস্ব হয়ে গেছে হাজারো মানুষ।
সুদী কারবারীরা অবৈধ এ ব্যবসা পরিচালনা করে প্রতিনিয়ত সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এ সুদি ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ দুই লক্ষ থেকে শুরু করে কোটি টাকা পযর্ন্ত বিনিয়োগ করছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। সুদী মহাজনরা নিজেরা কিংবা তাদের বেতন ভুক্ত দু/একজন লোক রেখে মাসিক হারে এ সুদের টাকা তুলছেন। টাকা তোলায় তাদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সংকেত। তারা দোকানে দোকানে নগদ কিংবা মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে সুদের কিস্তি নিয়ে থাকেন। যারা ভাল লেনদেন করে থাকেন, বছরের শেষে আবারো উৎসাহ দিয়ে সুদে টাকা নিতে আগ্রহী গুনরায় করে তোলেন তাদের।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব সুদি ব্যবসায়ীরা এলাকায় অন্তত: ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে দাপটের সাথে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এ সুদীরা এক লাখ টাকার বেশী হলে শতকরা ৩ টাকা হারে, টাকার অংক এক লাখ টাকার কম হলে শতকরা ৪-৫ টাকা হারে, আবার ৫০ হাজার টাকার নিচে হলে শতকরা ২০ টাকা হারে সুদ নিয়ে থাকেন।
সুদি এ ব্যবসায়ীদের নেটওর্য়াক আলীপুর-মহিপুর, কুয়াকাটাসহ সকল ইউনিয়নে। গোপন সংকেত হচ্ছে তাদের এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনার মূল ভিত। সুদী কারবারীরা প্রায়ই পৌরশহরের বাসিন্দা। এছাড়াও ইউনিয়নব্যাপী ২০/৩০জন করে এ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। এদের অধিকাংশই দৃশ্যমান কোন উপার্জন নেই । কোন কোন সুদকারবারীরা পযার্প্ত সম্পদের মালিক হলেও মূল ব্যবসা তাদের সুদে টাকা বিনিয়োগ। এসব সুদী ব্যবসায়ীরা লেনদেনে কোন ডকুমেন্টস রাখেনা। বিশ্বাসের উপরই তারা লেনদেন করে থাকেন। অনেক সুদী ব্যবসায়ীরা বটবৃক্ষে পরিনত হয়েছে।
মহামারি করোনা মোকাবেলায় হাজারো গ্রহীতারা সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে ভাল করতে না পারায় ব্যাপক লোকসানের সম্মূক্ষীন হয়ে পড়েছে । অনেক গ্রহীতারা সুদিকারবারীদের রোষানলে পড়েছেন ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রহীতা জানান, এসব সুদী কারবারীরা আপনজন চেনে না এমনকি তারা মহামারি করোনাকেও তোয়াক্কা করে না, নির্ধারিত সুদের এক টাকাও কম নিতে রাজী নয় তারা। এরফলে অনেকে সুদী কারবারীদের রোষানলে পড়ে সহায়-সম্বলহীন হয়ে অনেকে একেবারে পথে বরস গেছে ।
আগামীনিউজ/ হাসান