পটুয়াখালী: কলাপাড়ায় প্রতিবন্ধী-বয়স্ক-বিধবা ভাতা এবং জেলে কার্ড দেয়ার নামে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ গোলাম মাওলা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযুক্ত গোলাম মাওলা প্রভাবশালী এবং ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের অনুসারী হওয়ায় এর প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা কেউ। এলাকাবাসীর দাবি, ইউপি সদস্য জগৎ জীবন রায়ের সাথে তার চলাফেরা। তার নাম ভাঙিয়েই মূলত তিনি এসব অপকর্ম করে লক্ষ টাকা গায়েব করেন। গোলাম মাওলার এ অপকর্মের প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা গনমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গোলাম মাওলা ৪ নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুল ওহাব কারীর ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার সাধারন মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভাতা ও সুবিধা দেয়ার লোভ দেখিয়ে জনপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা তুলছে বেশ কয়েক মাস যাবৎ। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে এলাকার শত শত মানুষের কাছ থেকে তিনি অবৈধভাবে এ অপকর্ম করছেন। এছাড়াও বয়স হয়নি এমন অনেক ব্যক্তিদের কাছ থেকে তিনি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
দৌলতপুরের স্থায়ী বাসিন্দা মমিন ফরাজী এ প্রতিনিধিকে জানায়, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা এ গ্রামে আসেননা। ভাতা পাওয়ার বয়স হয়নি মমিনের অথচ গোলাম মাওলা তার কাছ থেকে বয়স্ক ভাতার জন্য ৪ শ টাকা নিয়েছেন। আরেক স্থানীয় হাফেজ সাইদুল হক জানান, বছর দুয়েক আগে গোলাম মাওলা তার বোন ফরিদা বেগমকে বিধবা ভাতা পাইয়ে দিবে বলে তার কাছ থেকে দুই হাজার ৫ শ টাকা নেন। কিন্তু তালিকায় নাম লেখাতে না পেরে দুই হাজার টাকা ৩/৪ কিস্তিতে ফেরত দেন। পরের বছর আবারো মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ৩০০ টাকা নিয়েছেন।
সলিমপুর গ্রামের সাহিদা বেগম এ প্রতিকেদককে জানান, তার মায়ের বয়স্ক ভাতার কথা বলে এক বছর আগে দুই হাজার টাকা নেন গোলাম মাওলা। কিছুদিন আগে তার মা মারা যান কিন্তু তার জীবিত মায়ের কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম মাওলা এ প্রতিনিধিকে বলেন, ৩/৪জনের কাছ থেকে তিনশ টাকা করে নিয়ে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার আনসার মোল্লাকে দিয়েছি। কারও কাছ থেকে ২ বা ৩ হাজার টাকা নেইনি। তবে আনসার মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
৪ নংওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জগৎ জীবন রায় গনমাধ্যমকে জানায়, ৪ নং ওয়ার্ডের জনগন আমাকে বারবার নির্বাচিত করে আমার সততার জন্য। গোলাম মাওলার পিতা ওহাব কারীকে অনেক সম্মান ও শ্রদ্ধা করতাম। গোলাম মাওলার এসব অপকর্মের সাথে তার কোন সর্ম্পৃক্ততা নেই বলে তিনি জোড় দাবী করেন।
কলাপাড়া উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বা কেউ কোন কিছু বলেওনি। বিষয়টি মিডিয়া কর্মীদের কাছ থেকে শুনলাম। তবে তার বিরুদ্ধে লিখিত কোন অভিযোগে পেলে আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।