রংপুরঃ মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর শাশুড়ি মামলা করেন তার জামাতার নামে। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন তার মেয়েকে হত্যার করার জন্য জামাতা অপহরণ করে গুম করেছেন। কিন্তু ২১ দিনের মাথায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে ওই অভিযোগের কোন ভিত্তি পায়নি। বরং তার মেয়েকে অপহরণ করে বিভিন্ন জায়গায় রেখে তিনমাস ধর্ষণ করার অভিযোগে পিবিআই গ্রেফতার করেছে পরকীয়া প্রেমিককে।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের হাজিরহাট থানা এলাকায়। এ ঘটনায় আদালত ওই নিরপরাধ স্বামীকে অব্যাহতি দিয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রংপুর পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, গত ১৭ আগস্ট এক নারী মেট্রোপলিটন আমলী আদালতে একটি মামলা করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন তার মেয়েকে জামাই খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে গুম করেছে। আদালত মামলাটির শুনানি শেষে তদন্তভার পিবিআইকে দেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলছেন, আদালতের নির্দেশে পিবিআইয়ের একটি ইউনিট সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার রহস্য উন্মোচনে নামি। এরইমধ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে আমরা ওই গৃহবধূকে গাজীপুরের কালয়াকৈর থানার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার জসুমন ব্যাপারীর বাসা থেকে উদ্ধার করি। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাবনার চাটমোহর থেকে নুরুল ইসলামের পুত্র মিঠু মোল্লাকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। ওই গৃহবধূ আজ রোববার (৫ আগস্ট) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জাকির বলছেন, ওই গৃহবধূ আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন, গ্রেফতার মিঠু মোল্লা প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ফুসলিয়ে বাড়ী থেকে নিয়ে ২৪ দিন পাবনা ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। এর সাথে তার স্বামী কোনোভাবেই জড়িত নন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শফিউল আলম জানান, আদালত জবানবন্দি শুনে গৃহবধূর ইচ্ছানুযায়ী তাকে স্বামীর হেফাজতে দেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত স্বামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। গ্রেফতারকৃত মিঠু মোল্লাকে আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পিবিআইয়ের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে মিঠু মোল্লার সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে ওই নারীর। সেকারণেই মূলত পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যান তিনি। কিন্তু মায়ের করা মামলায় শেষ পর্যন্ত ফেঁসে যায় পরকীয়া প্রেমিক।