গাজীপুরঃ জেলার শ্রীপুরে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রী নিখোঁজের পাঁচ দিন পরও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে, মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করার পর স্থানীয় মোজাম্মেল মেয়ের বাবাকে মুঠোফোনে মামলা মোকদ্দমা না করার হুমকি দিচ্ছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিবারসহ এলাকা থেকে উৎক্ষাত করার ভয় দেখাচ্ছে।
গত সোমবার (৯ আগষ্ট) সকাল ১০টায় তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা সালমা আক্তারের বাড়িতে প্রাইভেট শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে ওই ছাত্রী নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ স্কুল ছাত্রী উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে মারুফা আক্তার (১২)। সে টেপিরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
নিখোঁজ ছাত্রীর বাবা আমিনুল ইসলাম জানান, আমার মেয়েকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই একই এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে বখাটে মোজাম্মেল উত্যক্ত করতো। গত ৯ আগষ্ট প্রাইভেট শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে মেয়ে নিখোঁজ হয়। পরে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে এবং স্থানীয়ভাবে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে ওইদিন রাতেই শ্রীপুর থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করি। সাধারণ ডায়েরী করার ৫ দিন চলে যাওয়ার পরও পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি। হুমকির বিষয়টি আমি তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস আই) নাজমুল ইসলামকে জানিয়েছি। আজ পাঁচদিন হয়ে গেলেও পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে না পারায় হতাশায় ভোগছি।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, আমার মেয়ে খুবই ছোট। মাত্র অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলে যাতায়াতে বখাটে মোজাম্মেলের উত্ত্যক্তের কথা সে প্রায়ই আমাকে বলত। পরে ওই বখাটেকে নিষেধও করা হয়েছে। ওই বখাটে তাও বিরক্ত করতো। মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাবে, আমরা এটা বুঝতে পারেনি। নিখোঁজের পর ওই বখাটের সাথে স্থানীয় মেম্বারের (ইউপি সদস্য) মাধ্যমে অনুরোধ করেছি আমার মেয়েটাকে দিয়ে দিতে। সে আমাদের কথা শোনেনি। মেয়েটা এখন কী অবস্থায় আছে, সেটাও আমরা জানি না। পরে বাধ্য হয়ে থানার সাধারণ ডায়েরী করেছি। কিন্তু পুলিশ এখনো আমার মেয়েটাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েটাকেই চাই। বখাটে মোজাম্মেল মুঠোফোনে বেশি বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দিচ্ছে।
তেলিহাটি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার জয়নুল আবেদীন পিওর জানান, আমিনুল ইসলামের মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে জানতে পেরে আমি মোজাম্মেলের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেছি এবং মেয়েকে বাড়ীতে পৌছে দেওয়ার জন্য বলেছি। সে পৌছে দিবে বলেও জানায়। কিন্তু, পাঁচদিন চলে গেলেও এখনো মেয়েকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়নি। ওই চাত্রীকে সে নিয়ে গেছে বলে আমাদের কাছে স্বীকারও করেছে। এখন তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, বখাটে মোজাম্মেল একই এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে। সে এর আগে আরো ৪/৫টি বিয়ে করছে। তার মেয়ের ঘরের নাতিও রয়েছে।
মোজাম্মেলের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল ইসলাম জানান, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়ে ও মোজাম্মেলের সর্বশেষ অবস্থান জানার চেষ্টা করছি। নিখোঁজ স্কুল ছাত্রী মারুফা আক্তারকে উদ্ধারের অভিযান অব্যহত রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নিখোঁজ ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারবো।