নোয়াখালীঃ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(নোবিপ্রবি) ৬৭.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ক্যারিয়ার নির্বাচনে সরকারি চাকরিতে আগ্রহী। নোবিপ্রবি শিক্ষকদের করা গবেষণাপত্রে বিষয়টি উঠে এসেছে।
আজ (২৬ জুলাই) এই বিষয়টি গবেষণাপত্রটি হতে জানা যায়। গবেষণাটিতে ১৪ টি বিভাগের ১২০ জন শিক্ষার্থী মতামত প্রদান করেন। এদের মধ্যে ৬৫.৮ শতাংশ (৭৯ জন) ৪র্থ বর্ষের এবং বাকি ৩৪.২ শতাংশ (৪১ জন) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মতামত প্রদান করেন। ইতিমধ্যে গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক জার্নাল (আইজেইআরই) তে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশিয়লজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান সিদ্দিকী এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহানাজ আক্তার।
গবেষণাপত্র হতে জানা যায়, অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ৬৭.৫ শতাংশ (৮১ জন) শিক্ষার্থীর পেশা তালিকায় শীর্ষে সরকারি চাকরি এবং বাকি ৩২.৫ শতাংশ(৩৯ জন) শিক্ষার্থীর বেসরকারি চাকরিকে পেশা হিসেবে নেওয়ার পক্ষে মতামত প্রদান করেন।
সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সেক্টরভিত্তিক পরিসংখ্যান দেখানো হয় গবেষণাটিতে। এতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ৩১.৭ শতাংশ (৩৮ জন) বিসিএসে, ১৬.৭ শতাংশ(২০ জন) সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে,১০.৮ শতাংশ (১৩ জন) বেসরকারি /বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে,১০ শতাংশ (১২ জন) সরকারি ব্যাংকে,৫.৮ শতাংশ (৭ জন) বেসরকারি ব্যাংকে,৯.২ শতাংশ(১১ জন) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এবং বাকি ১৫.৮ শতাংশ (১৯ জন) পেশা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা,আইটি সেক্টরের পক্ষে মতামত প্রদান করেন।
গবেষণাটিতে অংশগ্রহণকারীদের ৫৭.৫ শতাংশ (৬৯ জন) ছেলে এবং বাকি ৪২.৫ শতাংশ (৫১জন) মেয়ে। এদের মধ্যে এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস বিভাগের ৮ জন, এসিসিই বিভাগের ৮ জন, এগ্রিকালচার বিভাগের ১০ জন, বিজিই বিভাগের ৮ জন, সিএসটিই বিভাগের ৭ জন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১১ জন,ই ইই বিভাগের ৭ জন, ইংরেজি বিভাগের ৮ জন, ইএসডিএম বিভাগের ১৪ জন, ফিমস বিভাগের ৯ জন, এফটিএনএস বিভাগের ৮ জন, আইসিই বিভাগের ৮ জন, ওশেনোগ্রাফি বিভাগের ৬ জন এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ৮ জন মতামত প্রদান করেন।
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের আর্থসামাজিক অবস্থানও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়।এদের মধ্যে ৭৫.৮ শতাংশ (৯১ জন) মধ্যবিত্ত, ৯.২ শতাংশ (১১ জন) নিম্নমধ্যবিত্ত এবং বাকি ১৫ শতাংশ (১৮জন) উচ্চ-মধ্যবিত্ত।
গবেষণাপত্রে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নির্বাচনে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরের প্রভাবের কথা বলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক প্রভাব ও পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষকের পরামর্শ, জবের সামাজিক মর্যাদা, জব সিকিউরিটি, প্রমোশনের সুযোগ, পেনশনের সুযোগ,প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্টের সুযোগ, একাডেমিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার বিষয়ক ট্রেনিংয়ের সুযোগ। অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার বিষয়ক ট্রেনিংয়ে নিজেদের যুক্ত না করা ও দিকনির্দেশনার অভাবে কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।
গবেষণাটিতে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নির্বাচনে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য আত্মউন্নয়নমূলক ট্রেনিং এবং কো কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসে যুক্ত হয়ে দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেন গবেষকরা। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্যারিয়ার গাইডলাইন বিষয়ক সেল গঠনের বিষয়ে উল্লেখ করেন গবেষকরা। গবেষণাটিতে সার্বিক সহযোগিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর।