বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় হাটসাজাপুর এলাকায় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বরাদ্দ পাওয়া বাড়ীতে বসবাস করছে বিধবা ফরিদা বেগম ( ৩৪)। দীর্ঘ ১৪ বছর কচুরিপানার মত ভেসেছে সে। বাড়ী বরাদ্দ পেয়ে ভাসমান জীবনের অবসান ঘটায় উচ্ছ্বসিত ফরিদা বেগম।
শনিবার (১৭ জুলাই) আগামী নিউজের কাছে ফরিদা বেগম তুলে ধরে তার ভাসমান জীবনের করুন কাহিনী।
ফরিদা বেগম জানায় , নাটোরের চলনবিল এলাকার এক অভাবী পরিবারে জন্ম তার। ১৪ বছর পূর্বে অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা ফরিদা বেগমের বিয়ে হয় দুপচাঁচিয়া পৌর এলাকার পাইকপাড়ার আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তির সাথে। স্বামী ভূমিহীন হওয়ায় অন্যের জায়গায় নির্মিত অস্থায়ী ঘরেই পাততে হয় সংসার। দিনমজুর স্বামীর সংসারে নিজেকে সুখী করে নিয়েছিল ফরিদা বেগম।
কিন্তু সেই সুখও যেন তার কাছে অধরা যায়। মাত্র তিন বছরের সংসার জীবনে বিধবা হয়ে যায় ফরিদা বেগম। ফরিদা বেগমের কোলে তখন মাত্র ৪১ দিনের শিশু কন্যা। শিশুকন্যা কে আঁকড়ে ধরে বেচেঁ থাকার স্বপ্ন আঁকে সে। অথৈ সাগর জলে জীবনভেলা ভাসাতে গিয়ে চোখেমুখে অন্ধকার দেখে ফরিদা বেগম।
আস্তে আস্তে কন্যা শিশু বড় হতে থাকে। একা জীবনের যুদ্ধে অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে ফরিদা বেগম। অন্যের বাড়ীতে ঘর গৃহস্থালির কাজ করে জীবন বাঁচালেও সংকটে পড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়ে। কাজ জুটলেও মেয়েসহ তাকে ঘুমানোর জায়গা দিতে চাইত না সহজে কেউ। অবশেষে বাধ্য হয়ে মেয়ে কে পাঠাতে বাধ্য হয় নানা বাড়ীতে।
বর্তমানে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ী পেয়ে তার সেই ভাসমান জীবনের ইতি ঘটেছে ।
বাড়ী পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ফরিদা বেগম আগামী নিউজ কে আরও জানায়, কখনও ভাবেনি তার নিজের একটি বাড়ী হবে। এ যেন তার কাছে স্বপ্নের মত।এজন্য জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত সহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া কামনা করে ফরিদা বেগম।
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রথম দফায় ১৩৩ টি এবং দ্বিতীয় দফায় ১৫০ টি বাড়ী বরাদ্দ পেয়েছে ভূমিহীন পরিবার।