Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সখীপুর থেকে প্রায় ১০ কোটি  টাকার কাঁঠাল যাচ্ছে সারাদেশে


আগামী নিউজ | শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২১, ০৬:৫৭ পিএম
সখীপুর থেকে প্রায় ১০ কোটি  টাকার কাঁঠাল যাচ্ছে সারাদেশে

ছবিঃ আগামী নিউজ

টাঙ্গাইলঃ বিস্তীর্ণ গ্রাম,যে দিকে চোখ পড়ে সেদিকেই কাঁঠালের সমারোহ। এমন চিত্র টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রামেই। এসব জায়গার কাঁঠাল যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এখন বাজারে উঠেছে সখীপুরের কাঁঠাল। তাই এই উপজেলার কাঁঠাল অর্থনীতি এখন বেশ চাঙ্গা। সুস্বাদু এ ফলের বাণিজ্যে সখীপুরের জনপদ সরগরম থাকবে আগামী ৩ মাস। কাঁঠালের মৌসুমে বদলে যায় গোটা সখীপুর উপজেলার চিত্র। বদলে যায় মানুষের জীবনমানও। তাই এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার কাঁঠাল ব্যবসায়ী-শ্রমিকরা। দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে। ফলে, এ মৌসুমে প্রায় ১০ কোটি টাকার কাঁঠাল যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কাঁঠাল চাষি ও ব্যবসায়ীরা এমনটাই জানান।

সখীপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ৭২০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপন্ন হয়। কাঁঠাল গাছের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৫২ হাজার। উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ২৫ লাখ ২০ হাজার পিচ। প্রতি মৌসুমে বিক্রি হয় প্রায় ১০ কোটি টাকার কাঁঠাল। উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, কচুয়া, নলুয়া, বাশতৈল, তক্তারচালা, মহানন্দপুরসহ আরও একাধিক জায়গায় কাঁঠালের হাট বসে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গৃহস্থরা ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, অটো, টে¤পুতে করে কাঁঠাল নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। এসব হাটে প্রতিদিন হাতবদল হয় লাখ লাখ টাকার কাঁঠাল। ভরা মৌসুমে এ অঞ্চলের বাতাসে বিরাজ করছে কাঁঠালের সুঘ্রাণ। শুধুমাত্র কুতুবপুর বাজার থেকেই প্রতি সপ্তাহে এ মৌসুমে ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক কাঁঠাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। তবে স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন, প্রায় ৩ যুগ পরেও সখীপুরে কাঁঠাল সংরক্ষণের জন্য কোনো হিমাগার গড়ে ওঠেনি। ফলে, সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার কাঁঠাল নষ্ট হয়ে যায়। চাষিদের কষ্টার্জিত কাঁঠালের ন্যায্যমূল্য পেতে কাঁঠাল সংরক্ষণের জন্য এখানে একটি হিমাগার স্থাপন করা জরুরি।

জানা যায়, অতি লোভনীয় ফল কাঁঠাল উপজেলার কৃষকদের জন্য একটি দুর্লভ অর্থকরী ফসল। এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে বানিজ্যিক আওতায় প্রায় লক্ষাধিক কাঁঠাল গাছ রয়েছে। এছাড়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে কাঁঠাল গাছ। স্কুল-মাদ্রাসার ফাঁকে ফাঁকে দেখা মেলে অসংখ্য কাঁঠাল গাছের। বসতবাড়ির আঙ্গিনায় প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল জন্মে। কাঁঠাল ব্যবসায়ী বছির উদ্দিন জানান, সখীপুরের কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে কাঁঠাল ঢাকা, কুমিল¬া, নোয়াখালী, সিলেট, লক্ষ্মীপুর, সুনামগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ রানা বলেন, কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিনামিট-এ এবং সি রয়েছে। আর বীজে রয়েছে শরকরা, প্রোটিন ও চর্বি। ফল ছাড়াও কাঁঠালের বীজ খুবই উপাদেয় খাবার। সখীপুর উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার আনিছুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার কাঁঠালের উৎপাদন বেড়েছে। সখীপুরের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী।

সখীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, সখীপুরের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এই এলাকার কাঁঠাল খেতে সুস্বাদু। কোন প্রকার পরিচর্যা ছাড়াই বাড়ির আঙ্গিনায় কাঁঠাল গাছ গজিয়ে থাকে। গাছের কাঁঠাল এবং কাঠ বিক্রি করেও প্রতিটি পরিবার লাভবান হতে পারে। তবে এখানে সংরক্ষনের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকলে কৃষক আরও বেশি লাভবান হতো। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে