Dr. Neem on Daraz
Victory Day

করোনায় বিনোদন দিচ্ছে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব


আগামী নিউজ | একরামুল ইসলাম, পীরগাছা(রংপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২১, ০১:৫৪ পিএম
করোনায় বিনোদন দিচ্ছে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব

ছবি: সংগৃহীত

রংপুরঃ দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অবসর সময় পার করছে সব বয়সের পেশাজীবি মানুষ। এছাড়া সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্ররাও বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছে। করোনার এই অবসরে ঘুড়ি উড়ানোকেই বিনোদন হিসেবে বেছে নিয়েছে পীরগাছা উপজেলার কিশোর-যুবকসহ নানা বয়সের মানুষ।

দিনের বেলার পাশাপাশি রাতেও রং-বেরঙ এর বাতি লাগানো ঘুড়িগুলো আকাশে তারার মতো জ্বলজ্বল করছে। যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। বিভিন্ন বয়সের এবং সব শ্রেণি পেশার মানুষ বিভিন্ন ধরণের ঘুরি তৈরি করছে। অনেকেই আবার নতুন করে শিখছে কিভাবে ঘুড়ি তৈরি করতে হয়। যারা তৈরি করতে পারছে না তারাও অন্যদের কাছ থেকে বানিয়ে নিচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেকের হচ্ছে হাত খরচের সুযোগ, কেউ আবার সংসারের ব্যয় নির্বাহ করছে। আবার অনেকেই ঘুড়ি বানিয়ে বিক্রি করে আয় করছে অনেক টাকা।

এ প্রসঙ্গে উপজেলার অনন্তরাম মাছুয়াপাড়া গ্রামের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মো. আমান বলেন, করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায়  আমি ঘুড়ি উড়াচ্ছি। খুব ভালো লাগছে।
ঘুড়িতে বাতি লাগিয়ে কিভাবে আকাশে উড়ানো যায়, এ প্রসঙ্গে সোহান নামের একজন বলেন, বাজারে বিভিন্ন ধরণের ছোট বাতি অথবা মরিচ বাতি পাওয়া যায়, এসব বাতি ঘুড়িতে বেঁধে উড়ানো যায়।

ঘুড়ি তৈরির কারিগর মো. রফিক বলেন, আমি বিভিন্ন ধরণের ঘুড়ি তৈরি করি। বিভিন্ন জনে বিভিন্ন ধরণের ঘুড়ি তৈরির আবদার করে। প্রতিটা ঘুড়ি কত টাকা করে নেন, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘুড়ির ধরণ অনুযায়ী দাম নেয়া হয়। যেমন- ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ২০০ টাকা এমনকি ৫০০টাকারও ঘুড়ি তৈরি করে থাকি।  

আরেকজন ঘুড়ি তৈরির কারিগর ৮০ বয়সের বৃদ্ধ মো. মফিজ উদ্দিন বলেন, আমি এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ঘুড়ি তৈরি করেছি। প্রতিটা ঘুড়ি ২০০-৫০০টাকা পর্যন্ত বিক্রি করি। এতে আমার কিছুটা আয় হচ্ছে। তিনি বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি তৈরি করছেন। অনেকে আবার শখের বশে ঘুড়ি তৈরি করতে তার কাছে ছুটে আসছে। এসব ঘুড়ির মধ্যে রয়েছে-ফিচকা, বড় ঢাল, ছোট ঢাল, চিলা, চঙ্গ, ব্যাঙ, মানুষ ঘুড়ি ইত্যাদি।

এসব ঘুড়ি তৈরি করতে সুতা, পলিথিন ও বর্ঁাশের কাঠি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক একটি ঘুড়ি তৈরি করতে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে বলে জানিয়েছেন ঘুড়ি তৈরির কারিগররা। ঘুড়িকে রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয়ে থাকে ঘুড্ডি।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু নাসের শাহ মো. মাহবুবার রহমান বলেন, সম্প্রতি সময়ে করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় অনেকে অলস সময় পার করছে। এই দীর্ঘ অলস সময় পার করতে অনেকে রাতের বেলায় ঘুড়ি উড়ানোকে বেছে নিয়েছে। এতে কিছুটা সময় ব্যয় হলেও সামাজিক অবক্ষয় থেকে তারা মুক্তি পাচ্ছে। ঘুড়ি উড়ানো আমাদের সমাজ থেকে বিলিন হয়ে যেতে বসেছিল। আবার ফিরে এসেছে। এটা নি:সন্দেহে একটা ভালো বিনোদন ।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে