বগুড়াঃ মানবজীবনের শৈশবের সাথে ঘুড়ির সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। ঘুড়ি উড়ানোর সেইদিনগুলি যেন এখন স্মৃতি হয়ে যেতে বসেছে। ঘুড়ি, নাটাই, সুতা নিয়ে শৈশবের এক দুরুন্তপনাময় দিন পাড়ি দিতো শিশুরা। শুধু শিশু কিশোররা নয়, বিভিন্ন বয়সের রাখালরাও মাঠে গরু ছেড়ে দিয়ে মনের আনন্দে ঘুড়ি উড়াত।
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বছরের এমন সময়ে ব্যাপকভাবে ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য দেখা গেলেও এবছর হাতে গোনা কয়েকটি ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য দেখা গেছে।
দুপচাঁচিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক কেএম বেলাল আগামী নিউজকে বলেন, ঘুড়ি সাধারনত মেলাতে পাওয়া যায়। এবছর বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য মাসে করোনা ভাইরাসের কারনে বিভিন্নস্থানে গ্রাম্যমেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় শিশু কিশোরেরা ঘুড়ি কিনতে পারেনি। আগের দিনের শিশু কিশোররা ঘুড়ি তৈরি করতে জানত। এখনকার শিশু কিশোররা ঘুড়ি তৈরি করতে জানে না বললেই চলে।
আদমদীঘি হাজী তাছের উদ্দিন মহিলা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শামছুজ্জামান সালাম আগামী নিউজকে জানান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভাবে ঘুড়ির সাথে শৈশব জীবনের সম্পর্ক কমতে শুরু করেছে। সমাজ বিবর্তনের ধারায় হয়ত ঘুড়িও একদিন হারিয়ে যাবে। ঘুড়ির উড়ানোর সময় ব্যয় হবে অন্য কাজে।
তিনি আরও বলেন, ঘুড়ি উড়ানোর নৈপুণ্য শিশু কিশোরদের দক্ষতা বাড়ে। ঘুড়ি উড়ানোর ফলে শিশু কিশোররা সামাজিক অপরাধ থেকে দূরে থাকে, তাদের মধ্য যোগাযোগ ক্ষমতা বাড়ে। আকাশে ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য পায় শিশু কিশোররা।
উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, যিশুখ্রিস্টের জন্মের প্রায় ২৮০০ বছর আগে সর্বপ্রথম চীনে উড়ানো হয় ঘুড়ি। এছাড়া দুরুত্ব মাপা, বাতাসের গতিবিধি দেখা থেকে শুরু করে সংকেত পাঠানোর কাজেও ব্যবহার করা হত ঘুড়ি।