ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ জেলায় জাহেরা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর কান কেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়েছে ছিনতাইকারী।
রোববার (১৩ জুন) সন্ধার দিকে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিহাইর নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে।
জাহেরা বেগম সদর উপজেলার তালশহর (পূর্ব) ইউনিয়নের মনপুরের খায়রুল ইসলামের স্ত্রী ও তালশর পূর্ব ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে তাকে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে আহত জাহেরা বেগম জানান, রোববার সকালে আমি আমার এক নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাই। সেখান থেকে শহরের মেড্ডা সিও অফিসে সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যাই আমার বোনের ছেলে ও খালাত বোনের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে। সেখানে কাজ করেন আমার পরিচিত শাহানা বেগম নামের এক নারী। আমি সমাজসেবা অফিস থেকে বের হওয়ার পর মোবাইল ফোনে একটি যুবক কল করে জানায়, শাহানা বেগম বলছে আমার সাথে দেখা করে বাড়িতে সিএনজি দিয়ে পৌছে দিতে।
তিনি বলেন, আমি শহরের কুমারশীল মোড়ে সিএনজি স্টেশনে যাওয়ার পর মোবাইলে কল করা একটি ছেলে আমাকে সিএনজিতে উঠিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলে। আমি সিএনজিতে উঠার পর আমার সাথে একটি ছেলে উঠে এবং ড্রাইভারের সাথে আরও একটি ছেলে বসে। সিএনজিটি মূল সড়ক দিয়ে না গিয়ে ভিন্ন একটি সড়ক দিয়ে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর সিএনজিটির সমস্যা হয়েছে বলে জানায়। আমার সিএনজিটি চালু করে বেহাইর যাওয়ার পর সাথে বসা ছেলেটি আমার গলায় ঝাপ্টে ধরে। তারপর নীরব জায়গায় সিএনজিটি দাড় করিয়ে ড্রাইভার সহ বাকী দুইজন আমাকে ছুরি ধরে। আমি ধস্তাধস্তি করলে উরুতে ছুরিকাঘাত করে এবং দুই কানের লতি কেটে স্বর্নালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়।
এসময় তারা কানের দোল, গলার নেকলেস, হাতের বালা ও মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলে পরিবারের সদস্যরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে’।
এদিকে ছিনতাইকারীদের হামলায় আহতের খবর পেয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জরুরী বিভাগে আসে সদর মডেল থানার পুলিশের একটি দল।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ফাইজুর রহমান জানান, ছিনতাইকারীদের হামলায় আহত নারীর উরুর দুইটি আঘাত গুরুতর। তার দুইটি আঘাতে ছুরি প্রায় দেড় ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্জি গভীর। এছাড়াও তার কানের দুইটি লতি কেটে নেওয়া হয়েছে। আমরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছি। অবস্থা অবনতি হলে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।
হাসপাতালে খবর পেয়ে আসা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হামজা জানান, ছিনতাইয়ে আহত হওয়ার খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসেছি। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতারা বিষয়টি জেনেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।