বরিশাল:বরিশালের বাকেরগঞ্জে চোরাই মোটরসাইকেলে নিজের ভাগ বুঝে না পেয়ে এক চোর জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুরো চোরচক্র নিয়ে ফেঁসে গিয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ চক্রটির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে শনিবার (১২ জুন) আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর আগে গ্রেপ্তারকৃত ওই চারজনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেছে। একই সাথে যে চোরাই মোটরসাইকেলের ভাগাভাগি নিয়ে চোরদের এমন কান্ড সেটিও জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার (১১ জুন) দুপুরে চারজনে বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হয়ে মোটরসাইকেলের ভাগাভাগি করছিলেন। ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে চক্রের সদস্য আব্দুল্লাহ আল আজাদ ও মেহেদী হাসান শাকিল মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যেতে পারেন এমন সন্দেহে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন চোর চক্রের আরেক সদস্য সাইদুল ইসলাম ইমরান। ৯৯৯-এর ওই কল পেয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইমদাদুল বাকেরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি মোটরসাইকেলসহ ওই চারজনকে আটক করেন। এ সময় আটক চারজনই মোটরসাইকেলটির মালিকানা দাবি করেন। কিন্তু কেউই গাড়িটির ক্রয় সূত্রের মালিকানার কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফিরোজ আলমের ছেলে আবদুল্লাহ আল আজাদ (২১), বাকেরগঞ্জ পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের আমির আলী বেপারীর ছেলে মেহেদী হাসান শাকিল (২২), নলছিটি উপজেলার রাজনগর এলাকার হোসেন মল্লিকের ছেলে সাইদুল ইসলাম ইমরান (২২), পটুয়াখালীর বদরপুর ইউনিয়নের তেলিখালি এলাকার বেলায়েত হোসেন মৃধার ছেলে রিপন মৃধা (২৫)।
বাকেরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তরুন কুমার জানান, গ্রেপ্তারকৃত চারজন স্বীকার করেছেন তারা চোরাই মোটরসাইকেল ক্রয় করেছেন এবং যার কাছ থেকে মোটরসাইকেলটি ক্রয় করেছেন তিনিও পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম চোরাই মোটরসাইকেলটি ক্রয় করেন। এরপর বাকেরগঞ্জের চোর চক্রের চার সদস্যের কাছে মোটরসাইকেল বিক্রি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন জানান, গ্রেপ্তারকৃত চারজনের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ এনে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার (১২ জুন) আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। ওসি আলাউদ্দিন মিলন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন দীর্ঘদিন ধরেই চোরাই মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন তারা। তাদের সঙ্গে আরো চার থেকে পাঁচ জন জড়িত আছেন।
এছাড়াও উদ্ধার হওয়া মোটরসাইকেলটি প্রথমে যিনি ক্রয় করছেন তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। ওসি আরো বলেন, চোরের ওপর বাটপারি করতে গিয়েছিলেন এই চোর চক্রের একজন। আর তাতেই পুরো ঘটনাটি বেড়িয়ে এসেছে। এই চক্রে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে মোটরসাইকেলের প্রকৃত মালিকের সন্ধান করা হচ্ছে।