নারায়ণগঞ্জ: রমজানে সারা দিন রোজা রাখার পর সবাই একটু ব্যতিক্রমি ইফতার করতে চায়। রূপগঞ্জের লোকজনও এর বাহিরে নয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রমজানের শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বৈচিত্রময় দেশিয় ইফতার সামগ্রি বেচাকিনি হচ্ছে।
স্থানীয় দোকানীয়া বিভিন্ন মুখরোচক ইফতার সামগ্রি বানিয়ে চেষ্টা করছে রোজদারদের আকৃষ্ট করার জন্য। তাই প্রতিদিন বিকালে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে এক দিকে গরম তেলের ছেন ছেন শব্দ, অন্যদিকে ক্রেতা সাধারনের সমাগম দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে বিক্রেতাদের সুর করে ডাকাডাকিতে মুখর হয়ে ওঠছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাটবাজারের ইফতারের দোকানগুলো। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিয়মিত ইফতার সামগ্রি বিক্রয়কারি দোকানের পাশাপাশি মৌসুমি ইফতার ও ফল বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে প্রচুর, তার সঙ্গে বেড়েছে ইফতার সামগ্রির মূল্যও।
একইভাবে ক্রেতার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার খামারপাড়া এলাকার ভোজন রসিক রোজদার হাবিবুর রহমান বলেন, বরাবরের মতো এবারও পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে হরেক রকমের ইফতার সামগ্রির পসরা সাজিয়ে গোটা রূপগঞ্জ জুড়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে, অলিগলিতে বসা স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানগুলোতে ইফতার বেচাকেনার ধুম পড়েছে। আবার বড় বড় খাবারের দোকান, হোটেল, রেস্তোরাগুলোতেও বিশেষ ধরনের মুখরোচক ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে।
রেস্তোরাগুলোতে দোকানের সামনে সামিয়ানাতে ব্যানার লাগিয়ে ইফতারি বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম যতই হোক না কেন ইফতার সামগ্রি কিনতে কেহই কার্পণ্য করছেন না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের ইফতারের দোকানগুলোতেও বিকেলে ইফতার বেচা কেনায় ব্যস্ত থাকেন সবাই।
রমজানে রূপগঞ্জের প্রচলিত বিভিন্ন ইফতার আইটেমের মধ্যে রয়েছে জিলাপি, বুরিন্দা, হাতে ভাজা মুড়ি, ছোঁলা, পেঁয়াজু, আলু ও ডিম চপ, সবজি চপ, বেগুনী বিক্রি হচ্ছে বেশি। অন্যদিকে কিছু সংখ্যক রেস্তোরায় কাবাব, মুরগীর গ্রীল, বিরিয়ানি, হালিম ও বোরহানিসহ অন্যান্য সামগ্রি বিক্রি হতে দেখা যায়। অনেক চায়ের দোকানেও অস্থায়ী চুলা বসিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা পূরনে দোকানের এক পাশে এসব ইফতার সামগ্রি তৈরি করছেন। এছাড়াও গ্রামের বিভিন্ন হাট বাজারের অলিগলিতে সব ইফতারের দোকানেই দেখা যায় একই চিত্র।
মুড়াপাড়া বাজারে ইফতার সামগ্রি কিনতে আসা শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, বাসায় যত ইফতারই তৈরি হোক না কেন ইফতারের দোকানগুলোর হরেক রকম ইফতার থেকে প্রতিদিন ই দু’একটি আইটেম কিনতে হয়। বাজারের ইফতার খেতেও মন্দ না, তবে এসব ইফতারের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলেও তিনি জানান। এ ব্যাপারে ডা. মেহেদী হাসান বলেন, বাজারের এসব ইফতার সামগ্রি মুখরোচক হলেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এগুলো খেয়ে মানুষের গ্যাসট্রিক, আলসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। ইফতারে নরম ও পানীয় জাতিয় খাবারই খাওয়া উত্তম।
অন্যদিকে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, এবার রমজানে মৌসুমি ফল আম, লিচু, কাঠালের সরবরাহ প্রচুর। তাই রোজদাররা হরেক রকমের ইফতারির সাথে মৌসুমি ফল কিনতেও ভুল করছেনা বলে জানান রূপগঞ্জের সাংবাদিক রাসেল আহমেদ।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুশরাত জাহান বলেন, কেউ ভেজাল ইফতার সামগ্রি বিক্রি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। গোটা রমজানে আমাদের ভেজাল বিরোধী অভিযান চলবে।
আগামীনিউজ/নাহিদ