জয়পুরহাটঃ প্রাকৃতিক সুন্দর্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো থাকায় সহজেই পর্যটকদের দৃষ্টি কারে জয়পুরহাট কালাই উপজেলার ঐতিহাসিক নান্দাইল দিঘী। শীতে নানা ধরনের অতিথি পাখির আগমণ ঘটে এই দিঘীতে। ঈদ উৎসবে হাজারও পর্যটকদের আগমণ ঘটে এখানে। এছাড়াও বছরের সব সময়ই পর্যটক আসে এখানে। বগুড়া-জয়পুরহাট মহাসড়কের পুনট বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বেই দিঘীটি অবস্থিত।
বগুড়া-জয়পুরহাট মহাসড়ক এবং জয়পুরহাট থেকে বগুড়া বাসযোগে যাওয়ার পথে পুনট বাসষ্ট্যান্ড নেমে ইজিবাইক কিংবা অটোভ্যানযোগে এই দিঘীতে যাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন, প্রশাসন এবং নান্দাইল দিঘী ঘুরতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজা নন্দলাল নাম থেকেই এই দিঘীর নামকরণ নান্দাইল দিঘী হয়েছে। নান্দাইল দিঘীর ইতিহাস ৪শ বছরের বেশি পুরোনো। করতোয়া নদী খনন করার ফলে এ অঞ্চলের পানি ঐ নদীতে নেমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে অর্থাৎ চৈত্র ও বৈশাখ মাসে মাঠ-ঘাট শুকিয়ে চৌচিড় হয়ে যেত এই এলাকায়। ১৬১০ খ্রিঃ রাজা নন্দলাল প্রজাকুলের চাষ ও খাবার পানি কষ্ট লাঘবের জন্য এই দিঘীটি খনন করেন।
কথিত আছে নন্দ রানীর ইচ্ছা অনুযায়ী লাখো শ্রমিক লাগিয়ে এক রাতে এই দিঘীটি খনন করা হয়েছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত দিঘীর তলদেশে কি আছে তা কেউ বলতে পারে না। এই দিঘীর আয়তন ১০০ একর। এই দিঘীর জলরাশির সৌন্দর্য, দিঘীর পাড়ের ছায়া ঘেরা মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে আসেন পর্যটকরা। এক কিলোমিটার লম্বা গভীরতাও বেশ। ২০/২৫ বছর আগে দিঘীর চারদিকে ঘন জঙ্গল ও উচু টিলা ছিল। সেই সময়ে আসত অতিথি পাখিও। আশির দশকে ঐতিহাসিক এই দিঘীকে পর্যটন হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যেগ নেওয়া হলেও পরবর্তীতে আর হয়নি। কালের বিবর্তনে দিঘীর পাড়ের মূল্যবান গাছ-গাছালি ও মাটি কেটে লুপাট করেছে স্থানীয় দূর্বত্তরা। হুমকির মুখে পড়ে দিঘীর পাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাতে চলেছে।
এ ব্যাপারে কালাই উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বাক্ষী নান্দাইল দিঘীর পর্যটন সম্ভবনা কাজে লাগাতে সম্প্রতি সরকার নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। দিঘীতে পর্যটকদের বেড়ে যাওয়ায় এর জলরাশি স্বচ্ছরেখায়, পর্যটকদের সুবিধার্থে ঘাট নির্মাণ এবং বিশ্রামাগার কাম রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। দিঘীর সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মেশিন চালিত স্পিডবোর্ড ও নৌকা রয়েছে। আশা করছি খুব অল্প দিনের মধ্যেই এখানে গড়ে উঠবে আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র।
আগামীনিউজ/জনী