খোকসায় টিউবওয়েলে পানি নাই: বিশুদ্ধ পানির সংকট
আগামী নিউজ | হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২১, ১২:২৮ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ
কুষ্টিয়াঃ জেলার খোকসা উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছরের মধ্য পানির স্তর এত নিচে নামেনি কখনোই। যেদিকে তাকাই সেদিকেই বিশুদ্ধ পানি ও জলের ব্যাপক সংকট চোখে পড়ে।
উপজেলার অধিকাংশ অগভীর নলকূপ টিউবওয়েলের পানি নাই। উপজেলা জবস্বাস্থ্য বিভাগ বলছেন, দীর্ঘ আট মাস কোন বৃষ্টি না হওয়া পার্শ্ববর্তী পদ্মা ও গড়াই নদীর পানির স্তরেজ নেমে যাওয়া ও গভীর নলকূপের মাটির নিচ থেকে পানি উত্তোলন করায় অগভীর এসকল টিউবলের লেয়ার পাচ্ছে না। উপজেলার অধিকাংশ টিউবওয়েলের পানি এখন আর উঠছে না।
উপজেলায় মোট কতটি গভীর ও অগভীর নলকূপ আছে তার সঠিক তথ্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগে জানা নাই। তবে উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সুমন আলী জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে উপজেলায় অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয় ১৩৪ টা, গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয় ১'শ টা। তার দাবি যার অধিকাংশই সচল রয়েছে।
খোকসা পৌরসভার চরপাড়া মুদী দোকানদার ফারুক হোসেন আক্ষেপ করে বললেন, ১২ বছর আগে বাড়িতে একটি টিউবওয়েল দিয়েছিলাম। ঐ টিউবওয়েল পানি দিয়ে আমাদের খাওয়া দাওয়া সহ সকল গৃহস্থলীর কাজ সম্পন্ন করতাম। এখন আর টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। টিউবওয়েল মিস্ত্রি চেক করে এসে বলল, পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় এই লেয়ার আপনার টিউবওয়েলে পানি উঠবে না।
বাধ্য হয়েই গত সপ্তায় দোকানের মাল না তুলে সাবমারসিবল পাম্প কিনে এনে গভীর নলকূপের মাধ্যমে বাড়ির পানির ব্যাবস্থা করেছি।
কোমলাপুর হিন্দু মহল্লায় প্রায় ৩৫ পরিবার বসবাস করে। প্রতিটা পরিবারের বাড়িতেই ছিল টিউবওয়েল। কিন্তু পাশ্ববর্তী গড়াই নদীর পানির স্তর একেবারে নিচে নেমে যাওয়ায়, এসকল টিউবওয়েলে পানি ও জল আর ওঠছে না। এলাকার সবগুলো টিউবওয়েলে পচুর পরিমানে আইরন পানি ও জল। যা পান যোগ্য নয়।
আমাদের পান যোগ্য একটিমাত্র টিউবাল ছিল মন্দিরের সাথে সংযুক্ত। সেটি এখন আর পানি ও জল উঠছে না। তিব্র পানি ও জলের সংকট দেখা দিয়েছে মহল্লায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ৬ টি টিউবওয়েল থাকলেও অধিকাংশ টিউবলের পানি ওঠে না।
দুর গ্রাম থেকে রুগীরা বিশুদ্ধ পানি ও জল পেতে টিউবওয়েল গুলোর কাছে গিয়ে দীর্ঘ সময় টিউবওয়েলের ১২ থেকে ১৪ পাম্প করে এক গ্লাস পানি পাচ্ছে। ফলে রুগীরা তৃষ্ণা নিবারণের এনার্জি লস এর কারণে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ছে।
খোদ উপজেলা পরিষদের মাঝেও অনেকগুলো টিউবওয়েল ছিল। যার অধিংশ অকেজ হয়ে পড়ে আছে। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের স্ব-স্ব দপ্তরের নিজস্ব উদ্যোগে গভীর নলকূপ স্থাপন করে সাবমারসিবল পাম্পের মাধ্যমে পানি ও জলের চাহিদা মেটাছেন।
উপজেলার জানিপুর পৌর বাজারের অধিকাংশ হার্ডওয়ার দোকান গুলোতে গভীর নলকূপ বসিয়ে সাবমার্চেবল পাম্প কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আরো নিচে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ভূ- প্রকৌশলীরা।
এসকল বিষয় বিবেচনা পূর্বক উপজেলার বিভিন্ন জনবহুল প্রান্তে গভীর নলকূপ স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানীয় ও জলের সুব্যাবথা পূর্বক সঠিক সময়ে পানি ও জলের সুব্যাবস্থার জন্য এলাকাবাসীর দাবি হয়ে উঠেছে।
আগামীনিউজ/এএস