ঢাকাঃ জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের একটি ‘ভাঙা সেতু’ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। সেতুৃতে নেই রেলিং। বেরিয়ে এসছে রড। ফাটল ধরেছে পিলার ও মূল সেতুতে।
দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে সেতুটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংস্কারের বা পুন:র্নিমার্ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ছয় মাসে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ সেতু থেকে পড়ে আহত হয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী আগামী নিউজকে জানায়, তৎকালে মূলত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও আসন্ন নির্বাচনে ভোট টানার কৌশল হিসেবে ২০০২ সালের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।কিন্তু নির্মাণের মাত্র ৬ বছরের মাথায় সেতুর দু’পাশের রেলিং ধীরে ধীরে খসে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণের সময় নিম্ন মানের ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রেলিং ভেঙে যায়। কিন্তু এরপর দীর্ঘ ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও এর সংস্কার করা হয়নি। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা শত আশ্বাস দিলেও নির্বাচনের পর তা কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হলেও জনপ্রতিনিধিরা নির্বাক।
স্থানীয়রা আগামী নিউজকে বলেন, বারুয়াখালী ইউনিয়নের ছত্রপুর, করপাড়া, ভাঙ্গাপাড়া, জৈনতপুর, দীর্ঘগ্রাম ও জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ঘোষাইল সহ ১০টি গ্রামের লোকজন এ ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সে হিসেবে ৪/৫ হাজার লোক ঝুঁকির মধ্য দিয়ে চলাচল করে।
এছাড়া সেতুটি পার হয়েই দোহার-হরিরামপুর উপজেলার একাংশের মানুষ বারুয়াখালী বাজার, কলাকোপা, বান্দুরা বাজার, নবাবগঞ্জ সদর ও ঢাকায় যাতায়াত করে। এছাড়া খুব বেশি জনসমাগম না হলেও দিনে ১০-১২ হাজার লোক ঝুঁকির মধ্য দিয়ে চলাচল করে। বিকল্প পথ অনেক দূরে হওয়ার অনন্যোনপায় হয়ে ইজিবাইক, ভ্যান ও রিক্সা বিভিন্ন যানবাহনকে এই ব্রিজটি দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় অসুস্থ মানুষজন। কারন ভাঙ্গাপাড়া ব্রিজের পাশাপাশি এর রাস্তার অবস্থাও খুব খারাপ। ব্র্র্র্রিজের দু’পাশের রেলিং না থাকার ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা আগামী নিউজকে জানান, কিছু দিন আগে মারুফ নামের চার বছরের এক শিশু ব্রিজ থেকে পড়ে আহত হয়। এছাড়াও রানা (১৪) নামে এক স্কুল ছাত্র ব্রিজ থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়। কিছু দিন আগে একটি মোটরসাইকেলসহ এক যুবক পড়ে গিয়ে গুরুত্বর আহত হয়। প্রতিনিয়তই ঘটছে এমন দুর্ঘটনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি আগামী নিউজকে বলেন, যখনই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয় এর কাজের মান নিয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তখনকার প্রভাবশালীদের ভয়ে কিছুই করা যায়নি। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এত টাকা খরচ করে ব্রিজ নির্মাণ করা হলো আর ব্যবহার করা হলো দুই নম্বর জিনিস। আসলে যেকোন সরকারি কাজ করার সময় নেতারা নিজেদের পকেট ভারী করায় ব্যস্ত থাকেন। অতি দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার না করলে যদি সম্পূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে যায় তাহলে স্থানীয়রা অনেক বড় সমস্যায় পড়ে যাবে।
বারুয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আরিফুর রহমান শিকদার বলেন, ব্রিজের পাশের রাস্তা কাপেটিং এর কাজ চলছে। এই ব্রিজটি ভেঙে নতুন বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।
এব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তরুন কুমার বৈদ্য বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
আগামীনিউজ/এএস