Dr. Neem on Daraz
Victory Day

কলেজে বিক্রি হচ্ছে প্রত্যয়নপত্র, ৭ই মার্চেও তোলা হয়নি জাতীয় পতাকা 


আগামী নিউজ | রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২১, ০৩:৪১ পিএম
কলেজে বিক্রি হচ্ছে প্রত্যয়নপত্র, ৭ই মার্চেও তোলা হয়নি জাতীয় পতাকা 

সিরাজগঞ্জের ডি.কে.বি.ইউ কলেজ ভবন : আগামী নিউজ

সিরাজগঞ্জ: সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের ডি.কে.বি.ইউ কলেজে জমে উঠেছে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট প্রত্যয়নপত্র বিক্রির ব্যবসা। আর এই ব্যবসার মাধ্যমে অসাধু কর্তৃপক্ষ হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা। যা অকপটে স্বীকারও করে নিয়েছেন ডি.কে.বি.ইউ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আঞ্জুয়ারা সুলতানা। প্রত্যয়ন পত্রের বিনিময়ে নেয়া সকল টাকা তার কাছেই আছে বলেও  বলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ৭মার্চ কে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জাতীয় দিবস ঘোষণা করে সকল প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দিলেও তাও মানছেন না অধ্যক্ষ। নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উত্তোলন করেননি জাতীয় পতাকা পর্যন্তও।

ডি.কে.বি.ইউ কলেজে টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়ন পত্র বিক্রি হচ্ছে ও জাতীয় পতাকাও উত্তোলন করা হয়নি নিকট এমন তথ্য আসার ভিত্তিতে সরেজমিনে দেখা যায় একই চিত্র ও পাওয়া যায় ঘটনার সত্যতা। রবিবার (৭মার্চ) বেলা সাড়ে ১০টায় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় ২৫-৩০জন শিক্ষার্থী দাড়িয়ে থাকলেও খোলা হয়নি কলেজ। ১১টার আগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানে আসলেন কলেজের পিয়ন। কিন্তু দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আসলেন না কোনো শিক্ষক, উত্তোলন করা হলোনা জাতীয় পতাকা। সেসময় টাকা নিয়ে প্রত্যয়ন পত্র কেনার জন্য অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।

কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা নাম পরিচয় প্রকাশ না করার ও ক্যামেরার সামনে কথা না বলার শর্তে বলেন, অসংখ্য শিক্ষার্থী ৫০-১০০ টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়ন পত্র কিনেছে। আমরাও কিনতে এসেছি কিন্তু এখনো স্যাররা কেও আসেনি। স্যাররা আসবেন জানিয়ে তারা আরও বলেন, শুনেছি প্রত্যয়ন পত্র সহ আবেদন করলে সরকার ১০হাজার করে টাকা দিবেন। আর এই সুযোগে কলেজ বানিজ্যে লিপ্ত হয়েছে। আবার দুজন শিক্ষার্থী বলে, আমরা শুনেছি এগুলো সব ভুয়া তাই টাকা ফেরত নিতে এসেছি। 

তবে কলেজে সাংবাদিকের উপস্থিতির খবর পেয়ে প্রতিবেদক থাকা অবস্থায় টাকা সংগ্রহ করতে কলেজে আসেননি কোনো স্টাফ।

এদিকে অধ্যক্ষের শুরুতেই এমন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় হতবাক শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী থেকে শুরু করে অভিভাবকরা পর্যন্ত। 

এ ব্যাপারে ডি.কে.বি.ইউ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আঞ্জুয়ারা সুলতানা টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি জানুয়ারির ১তারিখে দায়িত্ব নিয়েছি কিন্তু আসার পরে কলেজ থেকে দেবার মতো কোনো প্রত্যয়ন পত্র ছিল না। সেটা তৈরি করতে খরচ হয়েছে তাই টাকা নেয়া হচ্ছে। তবে এটা ভুল হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সকল টাকা আমার কাছেই আছে। এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করাটাও ভুল হয়েছে স্বীকার করলেও সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পতাকা উত্তোলনের কোনো ব্যবস্থা করেননি তিনি।

এ বিষয়ে ডি.কে.বি.ইউ কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. হায়দার আলী মন্ডল বলেন, টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়ন পত্র বিক্রি ও আজকের এই ৭মার্চ জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করা দুটোই গুরুতর অপরাধ এবং ক্ষমার অযোগ্য উল্লেখ করে বলেন, এটা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল। অবশ্যই এব্যাপারে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমি এখনই শুনলাম অভিযোগ পেলে অথবা অভিযোগ না আসলেও আপনি আমাকে জানালেন তার উপরেই কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মনির হোসেন আগামী নিউজকে বলেন, বিষয়টি আপনি জানালেন আমি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে বলবো।

আগামীনিউজ/মালেক

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে