কুড়িগ্রামঃ মাছের দাম কম না নেওয়ায় উপজেলা শহরের আলী হোসেন (৪৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক এর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাজীবপুর উপজেলা শহরের নামা বাজারের এই ঘটনা ঘটে।
মারপিট করার সময় ওই ব্যবসায়ীর ক্যাশ বাক্সে থাকা মাছ বিক্রির প্রায় ৯ হাজার টাকাও নিয়ে যায় হামলাকারীরা। মারপিটের শিকার আলী হোসেন এসব জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেলের উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের বড় ভাই আরিফ মাছ বিক্রেতা আলী হোসেনের কাছে পাঙ্গাশ মাছ কেনার জন্য দরদাম করেন। পরে ১১০ টাকা কেজিতে ৩ কেজি ১০০ গ্রাম মাছ নিয়ে বিক্রেতাকে ১০০ গ্রাম ওজন বাদ দিয়ে দাম হিসেবে করতে বলেন। এসময় বিক্রেতা ৩২০ টাকা দাম ঠিক করে দিলে আরিফ ৩০০ টাকা মাছের দাম দিতে চায়।
বিক্রেতা বলেন ২০ টাকা কম দিলে আমার লোকসান হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফ দোকানির উপর মাছ ছুড়ে ফেলে দেয়। বিক্রেতা প্রতিবাদ করলে আরিফ তাকে আরও গালমন্দ করে চলে যান। কিছুক্ষণ পরেই ঘটনা স্থলে আরিফের ছোট ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক তার অনুসারীদের নিয়ে এসে ওই মাছ বিক্রেতার উপর চড়াও হন এবং উপর্যপুরি কিল ঘুষি মারতে থাকেন। পরে সহযোগী মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা আলী হোসেনকে হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করে।
ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার কারনে বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করারও সাহস পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন মাছ বিক্রেতা আলী হোসেন।
তিনি আরো জানান, তিন কেজি মাছে ১০ টাকা কম নিয়েছি আরও যদি ২০ টাকা কম নেই তাহলে আমার কেনা দামও থাকবে না। আমাকে মারপিট করলো আবার ক্যাশ বাক্সে থাকা মাছ বিক্রির প্রায় ৯ হাজার টাকাও নিয়ে গেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই হাট কমিটির কাছে।
রাজীবপুর মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দাম কম না নেওয়ার কারনে এভাবে একজন ব্যবসায়ীকে মারপিট করে তার ক্যাশ বাক্সের টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তারা আতঙ্কিত।
এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি জানান তিনি। বণিক সমিতি যদি এই বিষয়ে কার্যকর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তারা বাজারে মাছ বিক্রিতে ধর্মঘট জারী করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। ছাত্রলীগ নেতা মাছ ব্যবসায়ীকে মারধরের বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা শহরের সর্ব সাধারণের মাঝে নানা সমালোচনা শুরু হয়।
মাছের দামের জন্য একজন ব্যবসায়ীকে মারপিট করার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও লজ্জিত।
রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, মাছ ব্যবসায়ীরা আমার কাছে এসেছিলো আমি দুই পক্ষের কাছে ঘটনাটি শুনেছি। তাদের নিয়ে বসে মিমাংসা করা হবে।
মাছ ব্যবসায়ীকে মারপিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক বলেন,মাছ ব্যবসায়ীর সাথে একটা সিনক্রিয়েট হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মিমাংসা করা হবে।
এ বিষয়ে রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নবিউল হাসান বলেন, মাছ বিক্রেতাকে মারপিট করার বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামীনিউজ/এএস