কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুকি নিয়ে নদী পার হচ্ছে বাঁশের সাঁকো দিয়ে। যুগ যুগ ধরে একটি ব্রীজের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কর্মব্যস্ত অসহায় মানুষ গুলো। নিজস্ব অর্থায়নে তৈরী করা ১২৫ মিটার বাঁশের সাকোঁই তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত এলাকার ১০টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করে আসছে জিঞ্জিরাম নদীর পূর্ব পাড়ে। ভারত থেকে বয়ে আসা জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন উপজেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার বিস্তির্ণ এলাকা বিকরীবিল, খেয়ারচর, চুলিয়ারচর, আলগারচর, চরলাঠিয়াল ডাঙ্গা, বাগানবাড়ী, ও বালিয়ামারী নয়াপাড়াসহ ১০টি গ্রাম। নানা প্রয়োজনে এসব গ্রামের মানুষকে জীবনের ঝুকি নিয়ে পার হতে হয় এই জিঞ্জিরাম নদী।
প্রতি বছর গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছা শ্রমে নিজস্ব অর্থায়নে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতয়াত করে থাকে। সারা-দেশে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের জোওয়ারে ভাসলেও, এসব অঞ্চলে আজও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। বাঁশের সাঁকোতে সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের ব্যাবস্থা হলেও, অন্যান্য যানবাহন চালনায় মানুষ রয়েছে চরম ভোগান্তিতে।
ভুক্তভোগী এলাকার আলহাজ হাছেন আলী, মুক্তিযোদ্ধা আজিম উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, দেশ স্বাধীন পেয়েছি দীর্ঘ ৪৮টি বছর অতিবাহিত হতে যাচ্ছে। দুঃখের বিষয় শুধু একটি ব্রীজের দাবী করেই গেলাম কিন্তু বাস্থবায়ন পেলাম না। দেশের সব স্থানেই উন্নয়নের জোয়ার বইছে কিন্তু এই এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়াও লাগেনী।
নির্বাচন এলেই অত্র অঞ্চলের মানুষকে জনপ্রতিনিধিগণ উন্নয়নের নানা ধরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও, নির্বাচন শেষে তাদের মাঠে দেখা যায়না। ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা মানুষ গুলো নদী বিচ্ছিন্নতার কারণে আতঙ্কে জীবন যাপন করে থাকেন। সীমান্তে দুর্ঘটনা ঘটলেও দ্রুত আইন-শৃংখলা বাহিনী ঘটনা স্থলে যেতে পারেনা। নিতে পারে না কোনো সু-ব্যবস্থা।
জনগণের দাবীর মুখে চর-লাঠিয়াল ডাঙ্গা জিঞ্জিরাম নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ওখানে একটি ব্রীজের বিশেষ প্রয়োজন। সরকারের কাছে জরুরী ভিত্তিতে জিঞ্জিরাম নদীর উপর একটি ব্রীজের দাবী জানাব এবং তা যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, চর লাঠিয়াল ডাঙ্গার জনগণ জিঞ্জরাম নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণের দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছে। আমি আমার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবগত করে এর একটা ব্যবস্থা নেবো।
আগামীনিউজ/লাভলু/মাসুম