কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাস থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক ভিক্ষুকের কাছে শিশুকে রেখে পালিয়ে যায় এক নারী। অবশেষে সেই শিশুটির ঠাঁই হল কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর স্ত্রী সুমনা আনোয়ারের কোলে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি বাসভবনে ইউএনও লুবনা ফারজানা আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটি জেলা প্রশাসক সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরী ও তার স্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
কোলে নিয়ে ডিসির স্ত্রী সুমনা আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে শিশুটি আমার ছোট সন্তান। আর সন্তান কোলে নিলে সব মায়েরই আনন্দ লাগে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন শিশুটিকে যেন লালন-পালন করে তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে পারি।
ডিসি সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরী এ সময় তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমার একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। আজ থেকে শিশুটি আমার দ্বিতীয় সন্তান হিসেবে থাকবে। তাকে কাছে পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে। শিশুটিকে আমার সন্তানের মর্যাদা দিয়ে সারা জীবন কাছে রাখব। সবাই দোয়া করবেন শিশুটি যেন আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখে।
শিশুটি হস্তান্তরের সময় ডিসির দুই বছর বয়সী মেয়ে সামিহা চৌধুরী খুব উচ্ছ্বসিত ছিল। তার মা সুমনা আনোয়ার এ সময় বলছিলেন এটা তোমার ছোট বোন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার এক নারী ভৈরবে বাস থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক ভিক্ষুকের কাছে শিশুটি রেখে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। ওই ভিক্ষুক এক ঘণ্টা পর স্থানীয় এক যুবক আশরাফুলকে ঘটনাটি জানান। পরে তিনি ঘটনাটি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানাকে অবহিত করেন।
এরপর ইউএনওর নির্দেশে আশরাফুল এ দিন রাত ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. বুলবুল আহমেদের নিকট শিশুটি রেখে আসেন। এরপর ইউএনও'র নির্দেশে শুক্রবার রাতেই পুলিশ এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করে।
জানা গেছে শিশুটি উদ্ধারের পর গত রোববার ইউএনও লুবনা ফারজানার নির্দেশে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কিশোরগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে একটি আবেদন করেন। আদালতের বিচারক রফিকুল বারী এ দিন রোববার কোনো আদেশ দেননি।
এ দিকে শিশুটি দত্তক নিতে ইউএনও এবং হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে কমপক্ষে ২০ জন আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান ইউএনও। এর মধ্যে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক সোমবার শিশুটিকে দত্তক নিতে আবেদন করেন। বিকালে বিচারক তাকে দত্তক দেয়ার আদেশ প্রদান করেন।
আগামী নিউজ/এসকেআর/এসএম