Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অভাবের তাড়নায় ৩০ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করলেন মা


আগামী নিউজ | রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৩, ০৯:৪৬ এএম
অভাবের তাড়নায় ৩০ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করলেন মা

ঠাকুরগাঁওঃ শিল্পী বেগম পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে। অভাবের তাড়নায় ৩০ হাজার টাকায় বাচ্চাটিকে বিক্রি করে দেন। শিল্পী বেগম গোয়ালপাড়া এলাকার রায়হানের স্ত্রী। স্বামীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের পর দীর্ঘদিন ভাড়া বাড়িতে তার বসবাস। 

 

তার বকেয়া পড়েছে বাসা ভাড়া। মুদি দোকানেও বাকি খেয়েছেন। সেসব টাকা পরিশোধে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক ছেলে সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। নবজাতকটি তার চতুর্থ সন্তান। যদিও সন্তান বিক্রির অর্থের বড় অংশই নিয়ে গেছে দালাল চক্র।

 

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। 

 

শিল্পী বেগম জানান, প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে হয় তার। সংসারে আরও দুই ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তবে চতুর্থ সন্তান গর্ভে আসার পরেই হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে চলে যান তার স্বামী রায়হান। এরপর অভাবের সংসারে বিপাকে পরে যান শিল্পী বেগম। সন্তান গর্ভে থাকার সময় বাড়িভাড়া ও মুদি দোকান মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ টাকা বকেয়া তার। 

 

তার অভাবের বিষয় জানতে পেরে গর্ভের সন্তান বিক্রির পরামর্শ দেয় দালাল চক্র। উপায়ন্তর না পেয়ে বাড়িভাড়া ও দোকানের বাকি পরিশোধ করতে নবজাতক সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

 

জানা গেছে, ইতোমধ্যে স্ট্যাম্পে নবজাতক কেনাবেচার বিষয় লেখালেখির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দালাল চক্রের হয়ে কাজ করছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকার মিনি বেগম ও শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার মাহমুদা বেগম।

 

নবজাতক শিশুর ক্রেতা সেজে কথা হয় দালাল চক্রের সদস্য মিনি বেগমের সঙ্গে। নবজাতক কেনাবেচার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি এই বছর ৫টি শিশু কেনাবেচার কাজ করেছি। কোনো সমস্যা হয়নি। আপনি চাইলে কম দামে আপনাকে একটা বাচ্চার ব্যবস্থা করে দেব।

 

মিনি জানান, তারা বেশ কয়েকজন মিলে এই কাজ করেন। বাজারে ছেলে শিশুর চাহিদা একটু বেশি। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় মেয়ে শিশু পাওয়া যায়। আর ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০ হাজার খরচ করতে হয় ।

 

নবজাতক শিশুর ক্রেতা জসিম বলেন, আমার বিয়ের বয়স ১৫ বছর। এখনো কোনো সন্তান নেই। ডাক্তার বলেও দিয়েছে যে, আমি আর কখনো বাবা হতে পারব না। তাই এই বাচ্চাটা কিনতে চেয়েছি।

 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন জানান, নবজাতক শিশু ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো সুযোগ নেই। এটা অপরাধ। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

আনোয়ার হোসেন আকাশ/এমআইসি 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে