কিশোরগঞ্জঃ কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের চৌকস টিম সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ২৭ বছর যাবত আত্নগোপনে থাকা পলাতক আসামী কে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূএে জানাগেছে , দীর্ঘ দিন যাবত
নিজের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা ও পেশা পরিবর্তন করে আত্মগোপনের মাধ্যমে নিজ এলাকা ছেড়ে ভিন্ন জায়গায় নাগরিকত্ব ও ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েও দীর্ঘ ২৭ বছর পর পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন হত্যাকারী।
১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে মৌটুপি এলাকার রসুলপুরের এক ডোবায় অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। বিষয়টি তখন এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। ঘটনার প্রেক্ষিতে ভৈরব থানার মামলা নং ১০(০৯)১৯৯৬ রুজু হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক হয়ে যান ওয়াহিদুল্লাহ্, পিতা-মৃত রূপ বাদশা, সাং-মৌটুপি, থানা-ভৈরব, জেলা-কিশোরগঞ্জ। ওয়াহিদুল্লাহ্ ঢাকায় বাদাম বিক্রি করতেন। ওয়াহিদুল্লাহর কথিত বন্ধু নিজামের সাথে হত্যার শিকার অজ্ঞাতনামা মহিলাকে তিনি তার বাড়িতে এনেছিলেন বলে স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
পরবর্তী এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পলাতক ওয়াহিদুল্লাহ্ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জসহ দেশের নানা এলাকায় পালিয়ে বেড়িয়েছেন। পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানাধীন বিন্নারবন্দ এলাকায় গিয়ে নাম, পিতার নাম, ঠিকানা মুছে ফেলে নতুন পরিচয় ধারণ করে। আর নতুন পরিচয় হয় অদুদ মিয়া, পিতা-ইছব আলী, মাতা-আছব বিবি, সাং-বিন্নারবন্দ, থানা-তাহিরপুর, জেলা-সুনামগঞ্জ, পেশা-কৃষি। ঐ এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে তিনি জাতীয় পরিচয় পত্র নং ৯০০৪৩৫১৩৫৪৬০ গ্রহণ করেন। পলাতক আসামী তার স্ত্রী-সন্তানসহ ঐ ঠিকানায় বসবাস করতেন এবং ঐ এলাকায় নিজ নামে জমিও ক্রয় করেছেন বলে জানা যায়। ঘটনা সংশ্লিষ্ট ভৈরব থানায় রুজুকৃত মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিচারের রায় হয় ০৯ অক্টোবর ২০২২ খ্রি:৷
বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পলাতক ওয়াহিদুল্লাহ্কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০০০ টাকা অর্থদণ্ড, যা অনাদায়ে ১বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, পিপিএম (বার) মহোদয়ের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই নূর মোহাম্মদের নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষ টিম পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামী ওয়াহিদুল্লাহকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করেন। গত ২৪-০৯-২০২৩ খ্রি: রাত ১১:০০ ঘটিকায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানার বিন্নারবন্দ এলাকা হতে ধরতে সক্ষম হয়। প্রাথমিকভাবে ওয়াহিদুল্লাহ্ তার প্রকৃত নাম অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদে ছদ্মবেশের কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেফতারকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামীর ওয়ারেন্টসহ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রি: বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
শাহ সারওয়ার জাহান/এমআইসি