Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বালিয়াকান্দি সাব-রেজিস্টার অফিস ঘিরে কোটি টাকার বাণিজ্য!


আগামী নিউজ | রাজবাড়ী প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ০৬:০৯ পিএম
বালিয়াকান্দি সাব-রেজিস্টার অফিস ঘিরে কোটি টাকার বাণিজ্য!

ফাইল ছবি

রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি সাব রেজিস্টার অফিসের পরতে পরতে দুর্নীতি। ঘুষ ছাড়া কোনো একটি কাজ স্বপ্নের সমান। দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারি রাজস্বের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়। এছাড়া হায়ার ভ্যালু, হেবা ঘোষণাতেও নেওয়া হচ্ছে বাড়তি মোটা অঙ্কের টাকা।

 

অভিযোগ রয়েছে, জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে উচ্চমানের জমিকে নিম্নমানের উল্লেখ করে দলিল সম্পাদন করার। যা উদ্দেশ্য সরকারের বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া। জমির শ্রেণি পরিবর্তনে সরকারের বিশাল রাজস্ব ফাঁকি দিলেও সাব-রেজিস্টার ও সংশ্লিষ্টরা হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে কথিত সেরেস্তার নামে টাকা আদায় এবং পদে পদে হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের ম্যারাথন অভিযোগ।

 

জমি রেজিস্ট্রেশন করতে সরকারি ফি ইউনিয়ন পর্যায়ে ৬.৫ শতাংশ।কিন্তু বালিয়াকান্দি সাব রেজিস্টার অফিসে সরকারি নিয়ম চলে না! চলে দলিল লেখক সমিতির নিয়ম। এখানে রেজিষ্ট্রেশনে নেওয়া হয় লাখে ১২ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার অব্দি। অঞ্চল এবং ব্যক্তি ভেদে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। 

 

এসব অতিরিক্ত টাকা প্রতিটি দলিল লেখককে সরকারি ফিসের সঙ্গে হিসাব করে আলাদা বুঝিয়ে দিতে হয় সমিতির কাছে। এরপর আরও কয়েক হাত ঘুরে সেই টাকার একটা অংশ যায় রেজিস্টারের হাতে। 

 

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক জানান, আমরা এখানে অসহায়, আমদের কিছু করার নাই। আমরা যদি দলিল প্রতি নির্ধারিত অতিরিক্ত টাকা হিসাব করে বুঝিয়ে না দেই তাহলে দলিলই গ্রহণ করবে না, সাইনতো দূরের কথা।তখন না খেয়ে মরতে হবে। তাই সব কিছু মেনে নিয়েই পেটের দুঃখে কাজ করে যাচ্ছি। 

 

ভুক্তভোগীরা জানান, সাফ কবলা দলিল, হেবা ও দানপত্রসহ যে কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারি ফির বাইরে দলিলদাতা ও গ্রহীতাকে বাড়তি টাকা খরচ গুনতে হয়। 

 

ঘুষের আদায়কৃত অর্থ সাব-রেজিস্টার, তার কর্মচারী ও দালালদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত হারে ভাগ করা হয়। অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোনো একটি দলিল নিবন্ধন হয়েছে এমন উদাহরণ নেই বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।  

 

বালিয়াকান্দি সাব-রেজিস্টার অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্টার আমির হোসেনের সাথে এইসব বিষয়ে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে প্রথমেই দুর্ব্যবহার করেন। তিনি সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে উপহাস করে বলেন আপনাদের আয়ের উৎস কি? এসময় তিনি পুলিশ ডেকে আটক করার হুমকি দেন।

 

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তার এমন ব্যবহারে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন।তাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করা উচিৎ ছিল, তা না করে এমন দুর্ব্যবহার সত্যিই অনৈতিক। আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। 

 

রাজবাড়ী জেলা রেজিস্ট্রার মো: সাজেদুর রহমান বলেন, আমাদের আগামীকাল সাব-রেজিস্টারদের সাথে মিটিং আছে। সেখানে সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি উঠানো হবে। 

 

মিঠুন গোস্বামী/এমআইসি 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে