স্বপ্নের ইতালি যাওয়া হলো না: ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ নরসিংদীর ৭ যুবক

---

আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধিঃ নরসিংদী প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৩, ১০:৩৮ পিএম

ফাইল ছবি

নরসিংদীঃ লিবিয়া হয়ে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার সময় নরসিংদীর ৭ যুবক নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। তারা প্রত্যেকেই নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বাসিন্দা।

নিখোঁজ ৭ যুবক হলেন- বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমান (২০) একই এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, কামাল হেসেন (৩৪), ভাটের চর গ্রামের হাসান উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (২২), দুলালকান্দি গ্রামের হারুন রশীদ রশিদের ছেলে মনির হোসেন (২২), একই এলাকার আব্দুল মোতালিব মিয়ার ছেলে রবিউল (৩৩), টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মহরম আলীর ছেলে স্বাধীন মিয়া (২০) এবং নিলক্ষিয়া গ্রামের আমান মিয়া (২১)।

জানা যায়, নিখোঁজ হওয়া যুবকরা ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা দিয়ে একই উপজেলার দুলাল কান্দি গ্রামের লাল মিয়া ছেলে জাকিন হোসেন এবং নুর কাসেমের স্ত্রী শাহিনুর নামক দুই দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে দেশ ছেড়ে ছিল।

নিখোঁজ কামাল মিয়ার ছোট ভাই জামাল মিয়া জানান, ৫-৬ মাস আগে আমার ভাইকে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালির উদ্দেশে প্রথমে লিবিয়া নিয়ে যায়। এরপর বেশ কিছুদিন গেমঘরে রেখে গত বুধবার রাত ৮টায় ডেঙ্গি নৌকায় তুলে ইতালির পথে যাত্রা করে। যাত্রার প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় পর ডেঙ্গি ডুবে যায়। এ সময় জাকিরের তত্ত্বাবধানে ডিঙ্গিতে থাকা ২০ জন থেকে ১২ জন ফিরে আসলেও আটজন নিখোঁজ রয়ে যায়। এ তথ্য দালাল জাকির হোসেন স্থানীয় মিলন মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের জানায়। আর নিঁখোজদের মাঝে আমার ভাইও আছে। 

নিখোঁজ রবিউলের ভাই ইব্রাহিম জানান, আমার ভাই আট মাস আগে লিবিয়া গিয়েছিল কিশোরগঞ্জের ভৈরবের দালাল রবিউল্লার মাধ্যমে। কিন্তু সেখানে ভাইকে বৈধ কোনো কাগজ করে দেয়নি। এসময় দুলালকান্দির দালাল জাকির হোসেন ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা নেয়। এখন আমার ভাই নিখোঁজ। আমরা আমার নিঁখোজ ভাইয়ের সন্ধান চাই।

রবিউলের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, আজ থেকে ১৭ দিন আগে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন আমার জন্য দোয়া কর। আমরা এখন গেম ঘরে আছি। আগামী বুধবারে ডেঙ্গিতে তুলবে। এ কথা বলে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিলন মেম্বার জানান, আমি খবর পেয়ে জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। ফোন দিলে মোবাইল অন্য একজন রিসিভ করে আমাকে জানান, জাকির হোসেনের অধীনে যে ২০ জন ছিল তার মধ্য থেকে ১২ জন উদ্ধার হলে ও আটজন কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এদিকে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হওয়ার খবরে দালাল জাকির হোসেন ও শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে।

এ বিষয়ে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে এবং লোক মুখে শুনেছি। এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, নিখোঁজের সংবাদ লোক মুখে শুনেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। নিখোঁজের বিষয় জানতে প্রবাসী ও বৈদেশি কর্মসংস্থানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।

এমআইসি

• বিষয়:
• ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি
• নিখোঁজ