যশোরঃ সারাদেশের ন্যায় যশোরেও চলছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং। রাত-দিন সমানতালে করা হচ্ছে লোডশেডিং। একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কারণে শহরে ৪-৫ ঘণ্টা এবং গ্রামে থাকছেনা ১০-১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ। আর একারণে বেড়েছে জ্বালানি তেলের ব্যবহার। বিসিকসহ শহরের স্বচ্ছল ব্যবসায়ীরা নিজস্ব ব্যবস্থায় জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। আবার বাসা বাড়িতেও করা হচ্ছে জেনারেটর। এতে বেড়েছে পেট্রোল ও ডিজেলের ব্যবহার। অনেকে কিনছেন আইপিএস।
এদিকে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় শিডিউল লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে যশোর ওজোপাডিকোর। ঘাটতি ছিল ১৯ মেগাওয়াট, লোড ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো কোনো এলাকায় একাধিকবার, কিছু এলাকায় এক ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গরমে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না।
করোনা পরবর্তী চাহিদা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজি, জ্বালানি তেলসহ সব কিছুর দাম আকাশচুম্বী। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। জ্বালানি তেল আমদানিতে সরকারের ভর্তুকি বেড়েছে। বর্তমানে ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারার কারণে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে বেড়েছে লোডশেডিং।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস্ এজেন্টস্ এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল জানান, লোডশেডিং বাড়ার কারণে স্বচ্ছল ব্যবসায়ীরা দোকান বা অফিসে জেনারেটর ব্যবহার করে থাকেন। ছোট জেনারেটরে পেট্রোল ও বড় জেনারেটরে ডিজেল ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক সপ্তাহ ধরে পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে।
যশোর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সহসভাপতি ও যাত্রীক পেট্রোল পাম্পের মালিক আতিকুর রহমান টিকু জানান, আমাদের পাম্পে প্রতিদিন ডিজেলের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার লিটার। আর পেট্রোল-অকটেনের আড়াই হাজার লিটার। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে ডিজেল ও পেট্রোলের বিক্রি বেড়েছে। যা খোঁজ পাচ্ছি সেটি হলো সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও বাড়িতে এসব জ্বালানি ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাচ্ছে।
যশোর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির নির্বাহী সদস্য হাসানুল কবির হাসান বলেন, গত ৭-৮ দিন ধরে সব পাম্পে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে। এভাবে লোডশেডিং হলে বিক্রি আরও বেড়ে যাবে।
শহরের এইচএমএম রোডের লেদার ফেয়ারের মালিক আমিনুল মজিদ তুষার জানান, লোডশেডিং হলে এঅঞ্চলের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী জেনারেটর ব্যবহার করছেন। অনেকের নিজস্ব আবার অনেকে ভাড়ায় জেনারেটর লাইন ব্যবহার করছেন। এতে আমাদের ব্যয় বাড়ছে। কেননা এক ঘণ্টায় দুই লিটার জ্বালানি পুড়ছে।
এইচ এম ক্লথ স্টোরের মালিক রাফিউল আলম বাবু বলেন, এখানে বিভিন্ন খাতের হাজারো ব্যবসায়ী রয়েছেন। এরমধ্যে ছিট কাপড়ের ৪০টি দোকান আছে। যাদের সবাই লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটর ব্যবহার করছেন।
একই অবস্থা যশোরের বিসিকে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এমইউ সিইএ ফুডসের স্বত্ত্বাধিকারী শ্যামল দাস বলেন, দেশের রপ্তানি খাতকে লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত রাখা উচিত। কেননা লোডশেডিং হলে আমাদের জ্বালানি খরচ অনেক বৃদ্ধি পায়। যেখানে আগে জেনারেটরে একদিনে ২০ লিটার ডিজেল। লোডশেডিং শুরু হবার কারণে এখন দিনে লাগছে ৬০ লিটার।
এব্যাপারে যশোর ওজোপাডিকো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রওশন আলী জানান, আমরা নিয়মানুযায়ী লোডশেডিং করছি। আমাদের এখানে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬০ মেগাওয়াট। সেখানে সরবরাহ
পাচ্ছি ৪০-৪২ মেগাওয়াট।
বুইউ