গাজীপুরঃ কোনোপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই দেশের বৃহত্তম গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। এখন চলছে ভোট গণনার কার্যক্রম।
সকাল ৮টায় ভোট শুরুর কথা থাকলেও ভোর ৬টার আগে থেকেই লাইনে দাঁড়ান ভোটাররা। দিনভর বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশ কেন্দ্রেই মানুষের লম্বা লাইন দেখা গেছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ভালো। প্রার্থীদেরও কোনো অভিযোগ নেই। কেন্দ্রে আসা কোনো ভোটার ভোট না দিয়ে ফেরত যাননি।
বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটির ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভোট সুষ্ঠু করতে সবকটি কেন্দ্রেই স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। মোট চার হাজার ৪৩৫টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন।
দেশের বৃহত্তম এই সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে মেয়র পদে আটজন ছাড়াও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
৫৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন এবং মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন। এছাড়াও বিপরীত লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছেন ১৮ জন।
ধারণা করা হচ্ছে, মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান (নৌকা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের (টেবিল ঘড়ি) মধ্যে।
সকালে ৫৭ নং ওয়ার্ডের দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন আজমত উল্লা খান। ভোট দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে এসেছে। অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হচ্ছে। জনগণের পাশে ছিলাম। জনগণ আমাকে ভালোবাসে। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। ফলাফল যাই হোক আমি মেনে নেব।
সকাল ১০টায় নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা এবং স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। ভোটদান শেষে তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রগুলোর পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো। এজেন্টদের অবস্থাও ভালো। ইভিএম নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
কাছাকাছি সময়ে ভোট দিয়ে জায়েদা খাতুনের সঙ্গে যুক্ত হন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘৪৮০টি কেন্দ্রে সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। কিছু জায়গায় আমাদের এজেন্টদের ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু তাতে কিছু যায়-আসে না। কোনো জায়গায় যেন ভোট ও ইভিএম মেশিন টেম্পারিং না করা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানাব। যদি কারচুপি হয় তাহলে গাজীপুরের মানুষ, দেশবাসী তা মেনে নেবে না।’
বুইউ