কক্সবাজারঃ সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর প্রভাবে তীব্র বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
রোববার (১৪ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে টেকনাফের বাহারছড়া, শামলাপুর ও নোয়াখালীয়াপাড়ায় তীব্র বাতাস ও বৃষ্টির দেখা মিলে। একই সঙ্গে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। সাগরের ঢেউ এর উচ্চতা ৪-৫ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, কক্সবাজার উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত অব্যাহত রয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুপুরের পরে তা আরও বাড়তে পারে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দমকা হাওয়া বইছে। সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে এখনো ঝড় ভয়ংকর আকার ধারণ করেনি। তবে, জানমাল রক্ষায় দ্বীপটির ৩৭ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৫ হাজার মানুষ।
দুপুর পৌনে ২টায় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিনে দুপুর থেকে প্রচণ্ড বাতাস হয়ে যাচ্ছে। গাছপালা ভেঙে পড়ছে। তবে পানির উচ্চতা তেমন বাড়ে নাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মাঝেও অনেকে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ফলে তাদেরকে বাড়ি থেকে সরানো যায়নি। অনেক অজুহাত দিয়েছেন তাদের একটা ঘর ফলে সেটি ছেড়ে তারা যেতে চান না। এ অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের তেমনভাবে জোর করা হয়নি।
ঘূর্ণিঝড় মোখা মূল আঘাত হানবে মিয়ানমারের ওপর। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকি কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা টেকনাফ থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্বে দক্ষিণ মিয়ানমারের সিট্যুয়ে অঞ্চল দিয়ে যাবে। রোববার (১৪ মে) বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তর ভবনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মূল ঝুঁকিটা চলে যাবে মিয়ানমার অঞ্চল দিয়ে। টেকনাফ, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের অঞ্চলগুলো ঝুঁকিমুক্ত হতে চলেছে। এর ফলে শুরু থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আমাদের যে ঝুঁকির সম্ভাবনা ছিল, এখন আর ততটা ঝুঁকি নেই।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পিক আওয়ার হবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এ সময়ে দ্রুত বেগে জলোচ্ছ্বাস প্রবাহিত হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আরও বলেন, বিকেল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় মোখা আমাদের অতিক্রম করে গেলেও এর প্রভাব থেকে যাবে আরও দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত। আর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পরিলক্ষিত হবে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে। আমরা আশঙ্কা করছি জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা যদি ৮ থেকে ১২ ফিট পর্যন্ত হয়, তাহলে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে অস্থায়ীভাবে পানির জলাবদ্ধতা থাকবে। তবে পর্যায়ক্রমে তা কেটে যাবে।
বুইউ