চট্টগ্রামঃ জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির তাপের ছাপ পড়ছে কৃষি কাজের ওপর। তেলের তাপের ফলে এখন পুরোপুরি হতাশ কৃষকেরা। কেননা, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সাথে বেড়েছে সারের দাম। এমতাবস্থায় কৃষি পণ্য উৎপাদনে পড়তে পারে শঙ্কা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কৃষকদের মধ্যে হাহাকার চলছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে আমনধান রোপনের মৌসুম চলছে। আমনধান সাধারণত বৃষ্টির পানিতে রোপন করা হলেও বর্তমানে বৃষ্টি না থাকায় অনেক কৃষক সেচ দিয়ে রোপন করছেন। কিন্তু ডিজেলের দাম বাড়াতে বেকায়দায় পড়েছে কৃষকেরা।
একাধিক কৃষকেরা জানিয়েছে, এক হেক্টর জমি মানে সাড়ে সাত বিগা। এতে এক হেক্টর জমিতে পানি সেচ দিতে প্রয়োজন ১০ লিটার ডিজেল। বর্তমানে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ডিজেল প্রতি লিটার ১১৪ টাকা করা হয়েছে। এতে ১০ লিটার ডিজেল পূর্বের চেয়ে ৩৪০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। ভাড়া সেচ পাম্প দিয়ে পূর্বে প্রতিঘণ্টা জমিতে পানি সেচ দিলে নেয়া হতো ১৫০ টাকা বর্তমানে তা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ২০০ টাকা এতে কৃষিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বেকায়দায় এবং লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
এদিকে গত ১ আগস্ট থেকে প্রতি ইউরিয়া সারের কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এক হেক্টর জমিতে প্রয়োজন হয় ৩৫ কেজি সার, সে হিসেবে প্রতি হেক্টর জমিতে ২১০ টাকা বেশি খরচ হবে। এতে প্রতি হেক্টরে একজন কৃষককে পূর্বের চেয়ে ৫৫০ টাকা বেশি খরচ করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার পুরো উপজেলা জুড়ে ২০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদের সম্ভাবনা আছে।
আবুল কালাম নামের স্থানীয় এক কৃষক বলেন, যে পরিমানে ডিজেল এবং সারের দাম বাড়ানো হয়েছে সামনে হয়তো চাষাবাদ করা বন্ধ করে দিতে হবে।
নুরুল করিম নামের আরেক কৃষক জানান, এখন বৃষ্টি হওয়ার কথা কিন্তু বৃষ্টি নেই। তাই আমনধান লাগানো হয়েছে সেচ দিয়ে। এদিকে ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে তাই পূর্বের চেয়ে অনেক টাকা বেশি দিয়ে সেচ দিতে হয়েছে। যদি ধানের সঠিক দাম না পাই তাহলে অনেক টাকা লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি উপ-সহকারি কাজী নুরুল আলম জানান, উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হওয়ার কথা। আমনধান বিশেষ করে বৃষ্টির পানিতে লাগানো হয়। কিন্তু বর্তমানে বৃষ্টি নেই। এতে অনেকে সেচ দিয়ে রোপন করছে। তবে ডিজেল ও ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের তুলনায় আমন রোপনে কৃষকের খরচ বেশি পড়বে এতে কৃষক যদি ধানের সঠিক দাম না পায় তাহলে বড় ধরণের সম্মুখীন হবে। এতে অনেকে কৃষি কাজে আগ্রহ হারাবে।
জাবেদুল ইসলাম/এমএম