নেত্রকোণাঃ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় নেত্রকোণায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব সড়কে বাসাভাড়া বাড়ছে। অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে চলাচলরত বাসের সংখ্যা। এদিকে বাসের বিকল্প হিসাবে ট্রেন, সিএনজিসহ অন্যান্য গণপরিবহনের ওপর চাপ বাড়ছে।
এদিকে নেত্রকোণার বাস মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সরকার এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় তারা কোনো বাসভাড়া বাড়ানাের ঘােষণা দেননি। তবে চালক ও শ্রমিকরা রুটে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে নেত্রকোণা আন্তঃজেলা বাসস্ট্যান্ড, রাজুরবাজার বাসস্ট্যান্ড ও বনােয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড গিয়ে বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রমাণ মিলেছে, আন্তঃজেলা বাসস্ট্যান্ড নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ সড়কের কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছ, টিকিট বিক্রেতা জুয়েল মিয়া পূর্ব নিধারিত ৬৫ টাকার বদলে ৮০ টাকা করে টিকিট বিক্রি করছেন।
অন্যদিকে নেত্রকোণা-ঢাকা সড়কের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩’শ টাকার বদলে ৩৫০ টাকায়। এছাড়া রাজুরবাজার বাসস্ট্যান্ড নেত্রকোণা-মােহনগঞ্জ ও নেত্রকোণা-কলমাকান্দা সড়কের এবং বনােয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড নেত্রকোণা-মদন সড়কের বাসভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে। এদিকে নেত্রকোণা-সিলেট সড়কে শুক্রবার রাত থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল হক রতন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পুষ্পেন্দু দত্ত রায় টিটু বলেন, ‘সরকার এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কােনাে সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা এখনও বাসভাড়া বাড়ানাের কােনো ঘােষণা দিইনি। তবে চালক ও শ্রমিকরা কিছু টাকা বাড়তি নিচ্ছে ।’ টিটু দত্ত বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘােষণা আসার পর প্রতিটি সড়কে বাস চলাচল অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। নেত্রকোণা-ঢাকা সড়কে যেখানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি বাস চলতাে, এখন সেখানে চলছে মাত্র ২০-২২টি। একই চিত্র অভ্যন্তরীণ সড়কগুলােতেও।’
বাস ভাড়া বৃদ্ধিতে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের মধ্যে হচ্ছে বিবাদ
নেত্রকোণা আন্তঃজেলা বাসস্ট্যান্ডের শাহজালাল ও মহুয়া কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে অনেক যাত্রীই টিকিট বিক্রেতার সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছেন।
মিলন কুমার দাস নাম পঞ্চগড় থেকে নেত্রকোণায় আসা এক যাত্রী অভিযােগ করেন, ‘গাজীপুর থেকে নেত্রকোণায় আসতে আমার কাছ থেকে ৩৮০ টাকা ভাড়া নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভাড়ার এই বৃদ্ধি ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ’।
নেত্রকোণা-ঢাকা রুটের শাহজালাল পরিবহনের চালক হানিফ মিয়া বলন, ‘আমাদের এক ট্রিপ আগে ৮ হাজার ৮শ টাকার ডিজেল লাগতাে। এখন তা কিনতে হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার ৫৪০ টাকায়। কাজেই বাসভাড়া বাড়ানাে ছাড়া আমাদের আর কােনাে উপায় নেই।’
এদিকে বাসভাড়া বাড়ানােয় সিএনজি, ট্রেন, ভাড়ায় চালিত মােটরসাইকেলসহ অন্যান্য গণপরিবহনের ওপর চাপ বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলােতে বাসের বদলে অনেকেই সিএনজি বা মােটরসাইকেলে চলে যাচ্ছেন। সিএনজি ভাড়াও বেশি নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা করে।
নেত্রকোণা রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোঃ নাজমুল হক খান জানান, সকালে নেত্রকোণা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে যাওয়া হাওর এক্সপ্রেস এবং বিকেলে ছেড়ে যাওয়া মহুয়া এক্সপ্রেস দ্বিগুণ যাত্রী পরিলক্ষিত হয়েছে।
সালাহউদ্দীন খান রুবেল/এমবুইউ