Dr. Neem on Daraz
Victory Day

প্রেমের টানে আমেরিকান তরুণী শ্রীপুরে


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২২, ০৮:৪১ এএম
প্রেমের টানে আমেরিকান তরুণী শ্রীপুরে

গাজীপুরঃ জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী কুমারভিটা এলাকায় ইমরান খান নামে এক যুবকের প্রেমের টানে আমেরিকা থেকে এক তরুণী বাংলাদেশে চলে এসেছেন। লিডিয়া লুজা খান সোমবার ভোর তিনটার দিকে হযরত শাহজালাল (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে বরমীর যুবক ইমরান খান তাকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর বাড়িতে তুলেন। ঈদের পরদিন ভিনদেশী এক নারী পারিবারিক সদস্য হয়ে আসায় ওই পরিবারের লোকজনের ঈদ কাটছে একটু ভিন্ন স্বাদে।

লিডিয়া লুজা আমেরিকার এ্যরিজোনা স্টেটের বাসিন্দা। বাবা নেই, মা অন্য পরিবারের সদস্য। দুই ভাইয়ের একটিমাত্র বোন সে। ছোট বেলা থেকেই লিডা লুজা দাদুর সাথে বড় হয়েছে।ধর্মান্তরিত হয়ে এখন তার নামের সাথে স্বামীর পরিবারের উপাধি হিসেবে “খান” শব্দটি যুক্ত হয়েছে। নিজ এদেশে একটি চাকরীতে যুক্ত ছিলেন। এখন বেকার সময় কাটাচ্ছেন।

বাংলাদেশের যুবক ইমরান খান গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী কুমারভিটা এলাকার মৃত জালাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। ইস্টওয়েস্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করার আগেই তিনি চাকুরী খুঁজছেন। সোমবার এ দম্পতিকে দেখতে পাড়া-প্রতিবেশীসহ আশপাশের এলাকার লোকজন অভিনন্দন জানাতে আসছেন। ওই এলাকার ঈদের আনন্দ এখন লুজা-ইমরান দম্পতিকে ঘিরে।

লিডিয়া লুজা বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে তাদের মধ্যে পরিচয় গড়ে উঠে। ফেসবুকে আলাপচারিতায় ইমরানকে তার ভাল লেগে গেছে। উভয় পরিবারের সম্মতিতেই সে ধর্মান্তরিত হয়ে বৈবাহিক বন্ধনের সিদ্ধান্তে উপনীতি হন। তিনি বলেন, ইমরান সৎ মানুষ। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশের মানুষও সৎ এবং প্রকৃতির মতোই এদেশের মানুষগুলো সহজ সরল। সব মানুষ ইংরেজী না জানার কারণে সবার সাথে ভাব বিনিময় করতে তার একটু সমস্যা হয়। তাছাড়া ভাষাগত পার্থক্য ও সততা ছাড়া আমেরিকা ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে অন্য সকল ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। তিনি বরমী বাজার ও আশপােেশর প্রকৃতি ঘুরে দেখেছেন। বাংলাদেশ তার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

লুজা জানায়, তার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম অসুস্থ। তাই মাঝে মধ্যে আমেরিকা যাবেন এবং বেশিরভাগ সময় স্বামী ইমরানের বাড়িতেই থাকবেন। শাশুড়ী সুস্থ হলে ইমরানকে নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করবেন।

ইমরান খান জানান, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। মাসখানেক পর লিডিয়া লুজা তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। প্রথমে সে তার প্রস্তাব বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। পরে মার্চ মাসের প্রথম দিয়ে আমেরিকা থেকে তুর্কি হয়ে লুজা বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত চলে আসে। আমেরিকার নাগরিক হওয়ায় তার ধারণা ছিল ভিসা ছাড়াই সে বাংলাদেশে আসতে পারবে। বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে আবার তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

ইমরান জানায়, পরে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্তে তারা নেপালে সাক্ষাত করেন এবং নেপালের একটি মসজিদে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। লুজার সাথে কেউ না থাকলেও ইমরানের সাথে ওই সময় তার পরিবারের সদস্য ছিলেন। সেখানে কয়েকদিন অবকাশ কাটিয়ে যার যার দেশে ফিরে যান। পরে ইমরানের সহযোগিতায় ভিসা সম্পাদনের মাধ্যমে ১১ জুলাই সোমবার লিডা লুজা খান বাংলাদেশে আসেন।

প্রতিবেশী বাবুল মিয়া জানান, তাঁর মতো অনেকেই এই দম্পতিকে দেখতে ইমরানের বাড়িতে আসছেন। আমেরিকার মেয়ে বলে কথা, তাও আবার বাংলাদেশি যুবকের প্রেমের টানে একেবারে বাংলাদেশের তৃণমূলের একটি গ্রামে। বিষয়টি এলাকার মানুষের মনে ভিন্ন আনন্দের যোগান দিয়েছে।

ইমরানের মা আনোয়ারা বেগম জানান, আমেরিকার মেয়েকে বিয়ে করায় তিনি খুশি হয়েছেন। যেহেতু ধর্মান্তরিত হয়ে তারা এ বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছে সেজন্য তিনি খুশি হয়েছেন এবং তাদেরকে পারিবারিকভাবে মেনে নিয়েছেন।

মোক্তার হোসেন/এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে