নোয়াখালীঃ জেলার সুবর্ণচরে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সুবর্ণচর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তরা হলেন, সুবর্ণচর জোনাল অফিসের সাব স্টেশন ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ আহমেদ ও লাইনম্যান মো.শহিদুল ইসলাম। আর নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন উপ-ব্যবস্থাপক কে আহবায়ক ও সহকারী ব্যবস্থাপককে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সুবর্ণচর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ফসিউল হক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ফসিউল হক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি কোনভাবে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সুবর্ণচরের সাব স্টেশন ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ আহম্মদ, লাইনম্যান মো. শহিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ(শনিবার) তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করতে আসবেন। যদি বরখাস্তকৃতরা দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. গোলাম মোস্তফা নির্দেশে সোনাপুর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক বলাই মিত্রকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে দুই সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখানে কারও গাফিলতির প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে মা-ছেলের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের চরফকিরা গ্রামের নেছার উদ্দিনের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৩৫) ও তার তিন বছরের ছেলে ইয়াছিন। কহিনুর পূর্বচরবাটা গ্রামে খায়রুল হাসান জমিদার শাহিনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার পর কহিনুর তার ছেলেকে কোলে নিয়ে পাশের বাড়ি যান। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনি বাড়িতে ফিরেননি। পথচারীরা বাড়ির পাশের একটি বাগানে কহিনুর ও তার ছেলেকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে দেখতে পান বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে আছে মা-ছেলে। পরে স্থানীয়রা চরজব্বার থানায় খবর দিলে পুলিশ বিকেলে এসে স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ানের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি চরজব্বার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য. গত বুধবার রাতে কাল বৈশাখির ঝড়ে ওই এলাকায় বিদ্যুতের অনেকগুলো তার ছিঁড়ে যায়। বিষয়টি সুবর্ণচর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এমনকি মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসেনি।
মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল/এমএম