Dr. Neem on Daraz
Victory Day

শ্রীপুরে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের


আগামী নিউজ | গাজীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২, ১১:৩২ এএম
শ্রীপুরে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের

ছবিঃ আগামীনিউজ

গাজীপুরঃ চলতি মৌসুমে জেলার শ্রীপুর উপজেলায় ব্যাপক পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষা চাষ প্রচুর লাভজনক হওয়ায় এবার অনেক কৃষক যোগ দিয়েছেন। এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন তারা।

জানা যায়, এবার  ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে আবাদ হয়েছে ৫৫ হেক্টর জমিতে। মাঠের পর মাঠ চোখ ধাঁধানো হলুদ ফুলের সমাহার। আর এ ফুলের মৌ-মৌ ঘ্রাণ ও মৌমাছির গুনগুন শব্দের নয়নাভিরাম চিরচেনা সেই অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্য। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার  বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠে এখন শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমারোহ।  স্বল্প খরচ আর কম সময়ে সরিষা চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায়। উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষা চাষ।প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে বারি-১৪ ও বারি -১৫ ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা আগ্রহী হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করেছেন। এরপর আবার ধান রোপণ করবেন কৃষকেরা। তাতে করে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

উপজেলার  বিভিন্ন মাঠে চাষ হয়েছে উন্নত জাতের সরিষা বারি-১৪ ও বারি -১৫। গাছের উচ্চতা হয় দেড় থেকে ২ ফুটের মতো। আগে সরিষা গাছ বড় হলেও ফলন কম হতো। নতুন জাতের ছোট আকারের এ সরিষা গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফল আসছে। বীজ বপনের ৭০ দিনের মধ্যেই খেত থেকে সরিষা সংগ্রহ করা যায়। চলতি বছরে উপজেলা সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি সম্পাসারণ অধিদপ্তর।

সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামের সরিষা চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন। লাভজনক এবং সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার চলতি রবি মৌসুমে শ্রীপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে চলতি বছরে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫০ হেক্টর জমিতে। সেখানে চাষ হয়েছে ৫৫ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নিজ মাওনা  গ্রামের আকবর আলীর ছেলে  সরিষা চাষি জুলফিকার আলী  বলেন, নিজের প্রয়োজন মেটাতে প্রতি বছর ২ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করি। এবার আড়াই  বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ১২-১৫ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারব।

মাওনা কৌনা পাড়া গ্রামের সরিষাচাষি আব্দুল হেকিম জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকা দরে। প্রতি বিঘাতে গড়ে সাত মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়। এছাড়া সরিষা আবাদে যেমন সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া কম সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা। এবার জাব পোকার আক্রমাণ দেখা যাচ্ছে না।

সরিষার তেলের রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। সরিষার খৈল পশুখাদ্য ও জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধিও কাজে ব্যবহার হয়। সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া জমিতে সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে জমির খাদ্য চাহিদা অনেকাংশে মিটিয়ে থাকে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা এ এস এম মূয়ীদুল হাসান বলেন, সরিষা চাষ সফল করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক কৃষকদের প্রয়োজনীয় ঋণ সহায়তা প্রদান করেছে।

আগামীনিউজ/নাসির

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে