Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ফেলানী হত্যার ১১ বছর আজ, বিচার না পেয়ে হতাশ বাবা-মা


আগামী নিউজ | জাহাঙ্গীর আলম, কুড়িগ্রাম প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২২, ১২:০৭ এএম
ফেলানী হত্যার ১১ বছর আজ, বিচার না পেয়ে হতাশ বাবা-মা

ফাইল ছবি

আজ ৭ জানুয়ারি। ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি ভারতের বঙ্গাইগাও এলাকা থেকে নাগেশ্বরী উপজেলার কলোনীটারী গ্রামের নূরুল ইসলাম তার পরিবার ও বড় মেয় ফেলানীকে নিয়ে বিয়ের উদ্দেশে নিজ দেশে আসতে ভারতের সীমান্তে ছয়টায় বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর অনন্তপুর সীমান্তে ৯৪৭নং আন্তর্জাতিক ৩নং সাব-পিলারের পাশ দিয়ে মই বেয়ে কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে বাবার সঙ্গে দেশে ফিরছিল ফেলানী। এ সময় টহলরত চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হন ১৪ বছরের কিশোরী ফেলানী খাতুন। হত্যার পর সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় ফেলানির লাশটিকে। নিজের চোখে ফেলানির বাবা নুরুল ইসলাম নুরু দেখেছেন সন্তানকে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা অবস্থায় তিলে তিলে মরে যেতে। ফেলানির সেই ঝুলে থাকা লাশের ছবি নিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় তোলে।ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাশটি ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে দিয়ে বিএসএফ লাশটি সরিয়ে নেয়।দু'দিনব্যাপী পতাকা বৈঠক শেষে হত্যার ৩০ ঘণ্টা পর ফেলানির লাশ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। ওইদিনই ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয় ফেলানিকে।ফেলানি হত্যার আড়াই বছর পর ২০১৩ সালের অগাস্টে ভারতের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ শুরু হয়।পরের মাসেই বিএসএফ জওয়ান আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফ এর ওই বিশেষ আদালত।এরপর রায় প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে পুনর্বিচারের দাবি জানান ফেলানির বাবা।

এর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পূর্ন:বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ০২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস্বীকৃত আসামী অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘মাসুমথ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানী শুরু হয়। ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮  সালে কয়েক দফা শুনানী পিছিয়ে যায়। পরে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনা শুরুর আগে শুনানীর দিন ধার্য হলেও শুনানী হয়নি এখনো। এদিকে  মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা-মা।

ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম জানান, আমার মেয়েটাকে বিয়ে দেয়ার জন্য ভারত থেকে বাংলাদেশে নিজ এলাকায় নিয়ে আসতে ছিলাম, বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ ও কিছু দালাল মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী আমি এর বিচার চাই।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম, দীর্ঘ বছর ১১ বছর পেরিয়ে গেল আমরা আজ পর্যন্ত আমার মেয়ে ফেলানী হত্যার বিচার পেলাম না, আমি একজন মা হয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমরা যেন এই হত্যার সুবিচার পাই।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড. এস,এম,আব্রাহাম লিংকন আগামী নিউজকে জানান, এই বিচারটি নিষ্পত্তি হওয়া উচিত,এই বিচারের ভিতর দিয়ে ভারতীয় উচ্চ আদালত অনেক নির্দেশনা দিতে পারে, যা আমাদের দুই দেশের বর্ডার ম্যানেজমেন্টের জন্য কিছু নির্দেশনা মূলক আদেশ থাকতে পারে,যা দুই দেশে শান্তিপূর্ণ বর্ডার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। যত দ্রুত সম্ভব সেটি বাস্তবায়ন হোক আমি সেটাই আশা করি।

আগামী নিউজ/এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে