ঠাকুরগাঁওঃ উত্তরের জেলার রাণীশংকৈলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে জনপদ। খেটে খাওয়া মানুষের বেড়েছে কষ্ট। বৃদ্ধ ও শিশুদের ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম হোসেন জানান, সোমবার উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ১১টা পর্যন্ত বাইরে মানুষ চলাচল করতে তেমন একটা চোখে পড়েনি।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। শীতে কাতর মানুষেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে; বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগে পড়েছে। গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া পরিবারগুলো গরম কাপড়ের অভাবে অসহায়। কাজে বের হতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। দুর্ভোগ বাড়তে শুরু করেছে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর শিশু ও বৃদ্ধদের। বাজার ও বাস টার্মিনালে ছিন্নমূল মানুষ অতিকষ্টে শীত নিবারণ করছে।
রাণীশংকৈল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা.ফিরোজ আলম
বলেন, কনকনে ঠান্ডায় বৃদ্ধ ও শিশুদের ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যার অধিকাংশ শিশু।
চিকিৎসকেরা বলছেন, শিশুদের বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। নতুবা ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখা বাড়বে।
তবে শীতকালীন ফসল সরিষা, গম, আলু, বেগুন, পেঁয়াজ, মরিচ ও বোরো ধানের বীজতলা শীত বা কুয়াশায় থেকে রক্ষা পেতে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার কথা জানান রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ।
পৌরশহরের রিকশাচালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে ঠান্ডার কারণে সকাল সকাল দোকানপাট খুলছে না। যেখানে দুপুরের আগে আমি দেড়-দুই শ টাকা ভাড়া পাই, এখন পঞ্চাশ টাকাও হাতে আসছে না।’
রাণীশংকৈলে সরকারিভাবে চেয়ারম্যান মেম্বার ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা না গেলেও কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে রাণীশংকৈল ফেসবুক ব্যবহারকারী গ্রুপের সদস্যদের শীতবস্ত্র বিতরণে ভালোই তৎপরতা দেখা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহেল সুলকান জুলকার নাইন কবির স্টিভ জানান, উপজেলা পর্যায়ে তালিকা করে অসহায় মানুষদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
আগামীনিউজ/বুরহান