বরগুনা: উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে ধান, সবজির পাশাপাশি পানির নিচে তলিয়ে গেছে খেসারিবুনা চাষিদেরও স্বপ্ন। কৃষকের কান্না হয়ে ঝড়ে যাওয়া অসময়ে এ বৃষ্টির কারণে ডুবে গেছে খেসারিডাল বুনা ধানি জমিগুলো। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে মহাদুশ্চিন্তায় উপজেলার প্রায় ১০ হাজার প্রান্তিকচাষি।
এসব চাষিরা বলছেন, রোপা আমনধান কেটে ঘরে তোলার ঠিক আগ মুহুর্তে হঠাৎ এ দুর্যোগ তাদের পথে বসিয়েছে। পানি কমে গেলেও কোনো লাভ হবে না। ধানি জমিতে যে খেসারি বুনেছিলেন তা অঙ্কুরিত হলেও সেগুলো পচে যাবে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খেসারিবুনার সব ধানি জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রয়েছে। প্রতিটি জমিতেই মাটিতে মিশে যাওয়া ধান গাছের ভেতরে লুকায়িত রয়েছে সদ্য অঙ্কুরিত খেসারিগাছ।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৮০০ হেক্টর উচুঁ ধানি জমিতে প্রতিকেজি বীজ ডাল ৬০ টাকা দরে ক্রয় করে ৬ হাজার ৫০০ কৃষক খেসারিডাল বুনে। চাষিদের দেওয়া তথ্য মতে, কৃষকের সংখ্যা ১০ হাজারেরও উপড়ে ও জমির পরিমাণও অধিক। কিন্ত জাওয়াদে আবাদকৃত খেসারির প্রায়সব জমি আক্রান্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ একাধিক খেসারিবুনা চাষী জানান, পানিতে ডুবে থাকায় খেসারিগাছ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সদর ইউনিয়নের চাষী মো: শহীদুল ইসলাম বলেন, ধার-দেনা করে ধানি জমিতে খেসারি বুনেছিলেন। তাই অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। জানি না কীভাবে দেনা শোধ করবো।
বেতাগী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: টুকা হাওলাদার। তিনি বলেন, প্রতিবছর এ মৌসুমে অধিক লাভ পাওয়ার আশায় ধানি জমিতে এ এলাকার চাষীরা খেসারিবুনে থাকে। তাই তিনিও খেসারিবুনে আগের লোকসান ঘোচানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি আরও বলেন, এবার তো তাতে কয়েকগুন লোকসান গুনতে হবে। সব স্বপ্ন পানিতেই ডুবে গেল। শুধূ একাই নয়, কথা হয় আরও একাধিক চাষির সঙ্গে। তাদের সকলেরই একই বক্তব্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা কৃষি অফিসার মো: ইকবাল হোসেন জানান, অসময়ে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে ঝড়ে যাওয়া বৃস্টি কৃষকের কান্না হয়ে ঝড়েছে। ধান খেতে পানি জমায় খেসারির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আগামীনিউজ/ হাসান