গোপালগঞ্জ: জেলার মুকসুদপুরে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত ৩য় ধাপের ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিপুল বিজয়। উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ১৩ টিতে নৌকার বিজয়, ২টি স্বতন্ত্র ও ১টিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর বিজয় হয়েছে। নানা জল্পনা কল্পনার অবসাদ ঘটিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, উৎসব মুখর ভোট উৎসব উপহার পেল উপজেলাবাসী। নৌকার এই বিপুল বিজয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি নবনির্বাচিত নৌকার চেয়ারম্যানদের তার ব্যবহুত ফেসবুক পেজে সকলের ছবি দিয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রবিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮ টা থেকে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদের ১৪৪ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন শুরু হয় । ভোট গ্রহন শুরু থেকেই উৎসব মুখর পরিবেশে কেন্দ্রে কেন্দ্র ছিলো ভোটারদের উপচেপড়া ভিড়। ভোট গ্রহনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপজেলার কোথাও কোন অপৃতিকর ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহণ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে ১৬ ইউনিয়নে ৮ জন রির্টানিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন ১৪৪ জন, সহকারী রির্টানিং অফিসার ৬৫৯ জন, পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন ১৩১৮ জন। মুকসুদপুর উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন, স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী মোট ৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করেছেন।
নির্বাচিত ১৬ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দীদের প্রাপ্ত ভোট :
পশারগাতী- আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকে রহমান মীর ৪৩৭৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে সৈয়াবুর রহমান পেয়েছেন ৩৩৪০ ভোট।
গোবিন্দপুর- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে ওবাইদুল ইসলাম ৮০৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে এনামুল হক পেয়েছেন ৬২৫৭ ভোট।
খান্দারপাড়া- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে মুহাম্মদ সাব্বির খান ৫১৩৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী মটর সাইকেল প্রতিকে শাহিদুল ইসলাম মুন্সী পেয়েছেন ২২৫৫ ভোট।
বহুগ্রাম- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে পরিতোষ সরকার ৩৭০০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে মামুন শেখ পেয়েছেন ৩৪৭৭ ভোট।
বাঁশবাড়ীয়া- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে মনিরুজ্জামান মোল্লা ৩৩৭২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী মটর সাইকেল প্রতিকে বদরুজ্জামান এজাজ পেয়েছেন ২১৪৪ ভোট।
ভাবড়াশুর- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে রিফাতুল আলম মুছা ৫৯১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে তবিউর রহমান পেয়েছেন ২৭৪৬ ভোট।
মহারাজপুর- আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে ৮৩৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আশরাফ আলী মিয়া (আশু মিয়া) পেয়েছেন ২৪০০ ভোট।
বাটিকামারী- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে শাহ আকরাম হোসেন ৫৭৫৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে ইবাদত মাতুব্বর পেয়েছেন ৫৫৭৯ ভোট।
দিগনগর- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা মার্কা মোহাম্মদ আলী শেখ ৫৯৪৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী মটর সাইকেল প্রতিকে শফিকুল ইসলাম মোল্যা (সাগর) পেয়েছেন ৫২৩৯ ভোট।
রাঘদী- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে সাহিদুর রহমান (টুটুল) ৮৭৪২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতিকে জিনদার আলী সাইফুর পেয়েছেন ২৫৪৩।
গোহালা- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে নজরুল ইসলাম মাতুব্বর ৪৯৯৩ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতিকে আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ৪৬৩৮ ভোট।
মোচনা- স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে ইমদাদ হোসেন ৪৫১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী চশমা প্রতিকে শওকত আলী পেয়েছেন ৩৬৩১ ভোট।
উজানী- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে শ্যামল কান্তি বোস ৪৩০৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে দিনেশ মন্ডল পেয়েছেন ৩৯১৬ ভোট।
কাশালিয়া- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে সিরাজুল ইসলাম মিয়া ৩৪৩২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে অশোক কুমার মৃধা পেয়েছেন ৩২৪০ ভোট।
ননীক্ষীর- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে শেখ রনি আহমেদ ৫২১৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী মটর সাইকেল প্রতিকে শেখ মজিবুর রহমান পেয়েছেন ২৪১৯ ভোট।
জলিরপাড়- স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে মিহির কান্তি রায় ৬৪৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিটকতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে বিভা মন্ডল পেয়েছেন ৫৮৭৬ ভোট।
মুকসুদপুর থানার ওসি আবু বকর মিয়া জানান, মুকসুদপুরে ৩য় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে অবাধ সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহনের নিমিত্তে আইনসৃংখলা বাহিনী যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পুন্ন করেছে। আইনসৃংখলা বাহীনি ভোট গ্রহনের যাবতীয় সরঞ্জাম গ্রহন করে প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে যার যার কেন্দ্রে পৌছে যাচ্ছে। নির্বাচনে প্রায় ১ হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন, র্যাব সদস্যরা ছিলেন, ৩ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিলো, আনসার সদস্য ছিলো দুই হাজার পাঁচশ জন এবং পুলিশের মোবাইল টিম ছিলো ১৬ ইউনিয়নের জন্য ১৬টি দল ও ৮ টি ষ্ট্রাইকিং ফোর্স দল সর্বক্ষন নির্বাচন সুষ্ঠ করার নিমিত্তে কাজ করেগেছে। কোন রকম অপৃত্তিকর ঘটনা ছাড়াই একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার পেয়েছে উপজেলাবাসী।
মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম শিকদার জানান, নির্বাচনে জয় পরাজয় থাকবেই।
মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনিত ১৩ জন ইউপি চেয়ারম্যানদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তাদের জয়ে আমরা আওয়ামী লীগ আনন্দিত। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ,ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবং যে সকল ভোটারের ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় লাভ করেছে তাদের জন্য কৃতজ্ঞতা। অবশেষে মুকসুদপুর উপজেলাবাসী একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপহার পেয়েছে।
আগামীনিউজ/ হাসান