Dr. Neem on Daraz
Victory Day
ছোট হয়ে আসছে দ্বীপ জেলা ভোলা

ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা রাজাপুর বাসী


আগামী নিউজ | মহিউদ্দিন , ভোলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২১, ১০:৪০ পিএম
ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা রাজাপুর বাসী

ছবিঃ আগামী নিউজ

ভোলা: দ্বীপ জেলা ভোলার চার দিকে নদী হওয়ায় এ জেলার মানুষের আতঙ্কের মধ্যেই দিন কাটে। নদী ভাঙ্গনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অসহায় হয়ে পরছে শতশত পরিবার। সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া কম হয়নি এ জেলায়। নদী মাতৃক এ জেলায় নদীনালা ভাঙ্গনের কারনে উন্নয়নের সুফলগুলো বেশিরভাগই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এমনটাই দেখা যায় ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর, ইলিশা ভেদুরিয়া,বোরহানউদ্দিন, মনপুরা, লালমোহন,সহ ভোলা জেলার বিভিন্ন স্থানে। ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের তিন চারটি ওয়ার্ড বিলিন হয়ে গেছে।

বর্তমানে সাবেক ওয়ার্ড গুলো ভাগ করা হলেও সেই ওয়ার্ডগুলো চলমান ভাঙ্গনে বিলিনের পথে।

ভোলার সর্ব উত্তরে মেহেন্দিগঞ্জের সীমানাবর্তী বহমান মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের কারনে এই মেঘনা নদীর তীরবর্তী রাজাপুর জোরখাল থেকে চর মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ নদী ভাঙনের তান্ডব চলতে থাকে। দীর্ঘ ১০ বছরের ও বেশি সময় ধরে মেঘনার ভাঙ্গন তান্ডব অব্যাহত রয়েছে। সংস্কার না হওয়ায়, বড় হচ্ছে রাক্ষসী মেঘনা আর ছোট হচ্ছে বিশাল আয়তনের রাজাপুর।ইতিমধ্যে এখানকার অসহায় মানুষগুলো হারিয়েছে তাদের বসতভিটাসহ আবাদি জমি।বর্তমানে নদীর তীরবর্তী যে সব পরিবার বসবাস করছে তাদের দিন কাটাচ্ছে চরম আতংকের মধ্যে। মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের ফলে, নদী সংলগ্ন জোরখাল জামে মসজিদ, চর মোহাম্মদ আলী স্কুল, কোড়ালিয়া স্কুল,  রাস্তা, বসতবিটা ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন এর পথে। অনেক পরিবার নদীগর্ভে সহায় সম্পত্তি হারিয়ে অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছে। কান্নাজড়িত কন্ঠে স্থানীয় আয়েশা খাতুন বলেন নদীগর্ভে বিলিন হয়ে আমরা আজ পথের ভিখারী।

২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মাসুদ রানা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ মেঘনার ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।স্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়ায় বর্তমানে রাজাপুর ইউনিয়ন হুমকির মুখে। তিনি বলেন আমাদের ভোলা জেলার অভিভাবক সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপির মাধ্যমে এ জেলার উন্নয়ন করেছেন। এখানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা মসজিদ যা এখন নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে। কিন্তু এ উন্নয়নের সুফল আস্তে আস্তে কেড়ে নিচ্ছে রাক্ষসী মেঘনা নদী। বর্তমানে মেঘনার ভাঙ্গন আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অসহায় মানুষগুলো সহায় সম্পত্তি হারিয়ে অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছে। এলাকাবাসীর জোড় দাবী মেঘনা নদীর ভাঙ্গনকে স্থায়ীভাবে ব্লকের মাধ্যমে বন্ধ করে রাজাপুর বাসিকে রাক্ষসী মেঘনার হাত থেকে রক্ষা করার।

তাছাড়া দক্ষিণ ইলিশায় পূর্বে ভাঙ্গন প্রকোপ বেশী থাকলেও এখন অনেকটা কম। রাজাপুর এলাকায় ভাঙ্গনের ফলে স্থানীয় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ঐতিহ্যবাহী রাজাপুর ইউনিয়নের কয়েকটা গ্রাম, বাজার কয়েক বছর আগেও জাকজমকপূর্ণ ছিল যা আজ শুধুই স্মৃতি।

কিন্তু বর্তমানে সর্বনাশা মেঘনার ভাঙনের মুখে অনেকটাই চারদিকের পরিবেশ যেন নিস্তব্ধ হয়ে পরেছে। মেঘনার ভয়াল ছোবলে বিলীন হওয়ার পথে এর গুরুপ্তপূর্ণ স্থাপনা। ইতোমধ্যে বহু পরিবার গৃহহারা হয়ে নিঃস্ব হয়েছে, কেউ আবার ভাঙনের শিকার হয়ে অসহায় হয়ে পরেছে।ঘর তোলার মত অবস্থাও তাদের নেই।

স্থানীয় ইসমাইল মোল্লা, কলেজ ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে অনেক বেশি পরিবারের মানুষ নদী ভাঙনের হুমকিতে পড়েছেন। এদের মধ্যে অনেকের ৩-৪বার ভাঙনের মুখে পড়েছেন। নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য নেই তাদের।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অসহায় অবস্থা নদীর কূলে বসবাস করে আসছে অনেকেই। তারা জানান, আমরা ভয়ের মধ্যে থাকি কখন নদী এসে সব ভেঙে নিয়ে যায়, রাতেও ঠিকমত ঘুমাতে পারিনা। আজ এখানে আছি তো কাল থাকতো পারবো কি না জানিনা।

এদিকে, ইতোমধ্যে বহু পরিবার গৃহহারা হয়ে নিঃস্ব হয়েছে, কেউ আবার ভাঙনের শিকার হয়ে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। আর তাই ভয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে রাজাপুরের চর মোহাম্মদ আলী স্কুল, কোড়ালিয়া স্কুল, রাজাপুর বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মাছঘাটসহ গুরুপ্তপূর্ণ স্থপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানান এলাকাবাসী।

রাজাপুরের স্থানীয় সাংবাদিক আমির হোসেন জানান, এখানে বর্ষার সময় হাজার হাজার মানুষের কোলাহল ছিল।কিন্তু এখন তা নেই। জোরখাল মাছ ঘাট, মসজিদ ও এই বাজারটি এখন মেঘনায় বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তাই এলাকাবাসীর জোর দাবী অতিদ্রুত ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের।

এ বাপারে পাউবো ডিভিশন ১ নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ও তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে