যশোরঃ ভারতে চামড়া পাচাররোধে যশোর সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে যশোর প্রশাসন। পশুর চামড়া পাচার রোধে কঠোর হবে যশোর প্রশাসন। স্থানীয় চামড়া যাতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চামড়ার হাট যশোরের রামনগর আসে সে বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। কোনবানির চামড়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের লক্ষ্যে হেিতামধ্যে কালেক্টরেট সভা কক্ষে প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ব্যবসায়ীরা ছাড়াও পুলিশ প্রশাসন, বিজিবিসহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নজরদারিতে আনা হয়েছে বন্দর এলাকাসহ স্থল ও রেলপথ। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এবছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর ঢাকার বাইরে দাম ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। অপরদিকে ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ টাকা প্রতি বর্গফুট। ভারতে চামড়ার দাম বরাবরই বেশি। সেই কারণে সীমান্ত পথে চামড়া পাচারের প্রবণতা রয়েছে।
গতবার ঈদে চামড়ার কোন দাম ছিল না। অনেকে বিক্রি করতে না পেরে নদীতে, হাটবাজার ও সড়কে ফেলে রেখে চলে গেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেনাপোল ও শার্শার পুটখালী, গোগা, কায়বা, অগ্রভুলোট, রুদ্রপুর, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, ঘিবা, সাদিপুর, বড় আঁচড়া, কাশিপুর ও রঘুনাথপুর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, খুচরা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামের চেয়ে আরো কম দামে চামড়া কিনে মজুদ করে রাখছেন। তারা স্থানীয় বাজারে চামড়া না তুলে নিজস্ব কায়দায় তা সংরক্ষণ করছেন। দেশের বাজারে দাম কম হওয়ায় এই চামড়া বাংলাদেশে রাখা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের পশুর চামড়ার গুণগত মান উন্নত। প্রতিবেশী দেশের পশুর চামড়া তুলনামূলক নিম্নমানের হওয়ায় এদেশীয় চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভারতে। চোরাকারবারিরা প্রতিবেশী দেশে চামড়া পাচার করে ওই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অন্যান্য মালামাল কিনে আনার চেষ্টায় থাকে। কুরবানি ঈদের সময় পশুর চামড়ার দাম বাস্তব সম্মতভাবে নির্ধারণ করা হলে পাচারের প্রবণতা কমে। পাশাপাশি স্বস্তিতে থাকেন ব্যবসায়ীরাও।
খুলনা ২১ ও যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মুনজুর এলাহী ও লে. কর্নেল সেলিম রেজা বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবি পোস্টে কড়া নজরদারি রাখা হবে। বিশেষ করে রাতে টহল ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হবে। যাতে কেউ অবৈধভাবে ভারতে চামড়া পাচার করতে না পারে। সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তগুলো চিহ্নিত করে টহল ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবত থাকবে বলে জানান ওই কর্মকর্তাদ্বয়।
যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না। হাটে বেচাকেনা করার সময় ওই সড়কে পরিবহন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। চামড়া পাচাররোধে সীমান্তে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সবর্দা দৃস্টি রাখতে বলা হয়েছে।