Dr. Neem on Daraz
Victory Day

উত্তরাঞ্চলে ভিজিএফ’র চালের পরিবর্তে দেবে নগদ টাকা


আগামী নিউজ | জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২১, ১২:১৫ পিএম
উত্তরাঞ্চলে ভিজিএফ’র চালের পরিবর্তে দেবে নগদ টাকা

রংপুরঃ করোনাকালে সবকিছুই করুণ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। বিশেষ করে চালের বাজার চরম অস্থির হয়ে উঠছে উত্তরাঞ্চলে। বিগত সময়ে অস্থির চালের বাজার সরকার নিয়ন্ত্রন করতেন কাবিখা, টিআর, ভিজিএফ’র চাল সাধারণের মাঝে সরবরাহ করে। চলতি সময়ে কাবিখার পরিবর্তে কাবিটা অর্থাৎ কাজের বিনিময়ে টাকা আর টিআর’র (টেস্ট রিলিফ) কাজও করা হচ্ছে নগদ অর্থে। ফলে সরকার চালের বাজার মোটেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না।

প্রতি ঈদের সময় দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের মাঝে সরকার ত্রাণ হিসেবে দিতেন প্রতি পরিবারে ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাল। এবারে দেয়া হবে চালের পরিবর্তে নগদ টাকা। খাদ্য বিভাগের দেয়া তথ্যে মতে বর্তমান সময়ে সরকারি খাদ্য গুদামে পূর্বের বছরের তুলনায় চালের মজুদ রয়েছে এক চতুর্থাংশের কম।

রংপুর বিভাগের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের দেয়া তথ্যে মতে দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। সেই হিসেবে প্রতি পরিবারে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হলে ৭০ হাজার মেট্টিক টন চালের প্রয়োজন। রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রন অফিসে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এই বিভাগের ৫৮টি উপজেলায় ৮৮টি খাদ্য গুদামে চালের মজুদের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার মেট্টিক টনের বেশি নয়। আর এ ভিজিএফ’র চাল দিতে গেলে আরও প্রায় ৩০ হাজার মেট্টিক টন চালের প্রয়োজন আছে। একই অবস্থা দেশজুড়ে বলে সচেতন মহলের মন্তব্যে জানা গেছে। গতবছর এই সময়ে সারা দেশে চালের মজুদ ছিলো ১৩ লাখ ২০ হাজার মেট্টিক টনের মতো। এ বছর এই সময়ে চালের মজুদ আছে মাত্র ৩ লাখ ২০ হাজার মেট্টিক টন। সেজন্য সরকার ভিজিএফ কর্মসূচি চালু রাখতে প্রতি পরিবারে ১০ কেজি চালের পরিবর্তে ৪৫০ টাকা করে দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বর্তমানে খুচরা বাজারে মোট চালের কেজি ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকা। ১০ কেজি চাল কিনতে গেলে খুচরা বাজারের মূল্য মতে দাম লাগবে ৫০০ টাকা। ভিজিএফ’র চালের পরিবর্তে সরকার যে নগদ অর্থ দিবে সেই টাকা দিয়ে মানুষ বাজারে চাল কিনতে যাবে। এতে করে বাজারে ক্রেতার চেয়ে চালের পরিমানে ঘাটতি থাকলে চালের বাজার আপনা আপনি অস্থির হয়ে উঠবে। আর এই সুযোগে অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা মানবিক মূল্যবোধ ভুলে গিয়ে গড়ে তুলবে সিন্ডিকেট। তখনই মোটা চালের কেজি খুচরা বাজারে ৫৪ থেকে ৬০ টাকায় উঠানামা করবে বলে একাধিক বিশিষ্টজন তাদের মন্তব্যে জানিয়েছে।

এবারে বোরো মৌসুমে সরকার চাল কিনবে ৪০ টাকা কেজি দরে। উত্তরাঞ্চলে খাদ্য গুদামে মিল মালিকরা চাল সরবরাহ করতে পারে জুন মাসের শেষে কিংবা জুলাই মাসের প্রথম হতে। ততোদিনে চালের বাজারে আগুন জলতে থাকবে। চাল আমদানিকারকরা করোনাকে পুজি করে গড়ে তুলবে আরো শক্তিশালি সিন্ডিকেট।

আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে ভারত থেকে আমদানি করা ২৮ জাতের চাল পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) বিক্রি করা হয় ১২২০ টাকা দরে। সেই চাল পাইকারি ব্যবসায়ীরা ১৩৫০ টাকা দরে প্রতি বস্তা বিক্রি করে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেজি প্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা লাভ ধরে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে দেয়। খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কাছে কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা লাভে বিক্রি করে। হাত বদল হতে হতে কেজি প্রতি ভোক্তাদের কাছে চাল পৌছে ১০ টাকা বেশি দরে। এতে করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের চাল কিনতেই নাভিশ্বাষ উঠে যায়। সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের অভিমত সরকার সরসরি চাল আমদানি করে টিসিবি’র মাধ্যমে ভোক্তাদের হাতে পৌছালে কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে খাদ্য পণ্য সাধারণ মানুষ কিনতে পারবে। আর গণমানুষের এই দাবি আমলে নিতে সরকারের প্রতি সুশিল সমাজ একান্ত ভাবে দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় নিত্যপণ্যের মূল্যের বাজার আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিলে সাধারণ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা খুব কষ্টের হবে।

আগামীনিউজ/জনী

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে